—প্রতীকী চিত্র।
সামাজিক অনুষ্ঠানে সোনার গয়না উপহার দেওয়ার রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের। বিশেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে পাত্র বা পাত্রীকে সোনার গয়না উপহার দিয়ে থাকেন অনেকে। সোনার দাম বৃদ্ধির ফলে শুধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী নয়, সমস্যায় পড়েছেন মধ্যবিত্তেরাও। এক দিকে, হাতে নগদের অভাব আর অন্য দিকে, সোনার দাম ক্রমে আকাশছোঁয়া হতে থাকায় লৌকিকতা বজায় রাখতে গিয়ে সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে মধ্যবিত্ত।
ন্যূনতম সোনার গয়না কিনতে গিয়ে অনেকের বাজেট শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার পরেও আসন্ন লোকসভা ভোটে এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি জেলার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে।স্বর্ণশিল্পীদের একাংশ জানান, সোনার অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি সমাজের একটা বিরাট অংশের মানুষের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলেছে। ক্রেতা ও বিক্রেতা সকলেই সঙ্কটে পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সকলেই চাইছেন, রাজনৈতিক দলগুলি স্বর্ণশিল্প নিয়ে সরব হোক। এই শিল্প এবং শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িয়ে থাকা পরিবারগুলিকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুক। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পদক্ষেপ করুক।
জেলার স্বর্ণশিল্পীরা বলছেন, “সোনার গয়না ব্যবসায় সঙ্কটে পড়েছেন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। আমরা নিজেদের মতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে রাজনৈতিক দলগুলি এ নিয়ে সরব হলে সঙ্কট মুক্তির বিষয়টি আরও গুরুত্ব পাবে।”
রাজনৈতিক দলগুলি কি সত্যিই এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে?জেলার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির বক্তব্যে স্পষ্ট, তারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নিয়ে সরব হলেও আলাদা করে স্বর্ণশিল্পের সঙ্কট নিয়ে ভাবেনি। তাদের ইস্তাহারেও এর কোনও প্রতিফলন নেই। যদিও সকলের কমবেশি দাবি, ক্ষমতায় এলে সমস্যার স্থায়ী সমাধানে মনোযোগী হবে।
সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাস বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উপর জোর দেওয়ার কথা বলে আসছি। আমরা প্রথমেই বলেছিলাম, জিএসটি চালু হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সঙ্কটে পড়বে। সেটাই হচ্ছে। স্বর্ণশিল্প তারই জ্বলন্ত উদারহণ।” তিনি আরও বলেন, “এটা ঠিক, আমরা হয়তো আলাদা করে স্বর্ণশিল্প নিয়ে সরব হইনি। তবে সমগ্র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে বাঁচাতে সব সময় রাস্তায় নেমেছি। আগামী দিনেও লড়াই চালিয়ে যাব।”
তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর সবার দিকে সমান নজর রয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন এই ধরনের শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তিনি কতটা আন্তরিক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। অপেক্ষা করুণ স্বর্ণব্যবসায়ীদের জন্য তিনি নিশ্চয়ই আলাদা ভাবে কোনও না কোনও পদক্ষেপ করবেন।”বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “নরেন্দ্র মোদী দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য ভাবেন। সেখানে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলে আলাদা করে কিছু নেই। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করতে আগামী দিনে নিশ্চয়ই কোনও পদক্ষেপ করবেন।” (শেষ)