বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের ঠিক মুখে দিল্লির সাংসদ তথা ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর ঘোষণা করলেন তিনি তাঁর রাজনৈতিক দায়িত্ব-কর্তব্য থেকে অব্যাহতি চান। গম্ভীর বিজেপির সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপির টিকিটে পূর্ব দিল্লির লোকসভা কেন্দ্রে জিতেওছিলেন। কিন্তু ঠিক পাঁচ বছর পর ক্রিকেটার সাংসদ জানালেন, তিনি তাঁর ক্রিকেট সংক্রান্ত দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালনেই মনোযোগ দিতে চান। এই মর্মে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে অনুরোধও জানিয়েছেন।
শনিবারই প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর (প্রাক্তন অধিনায়ক) গম্ভীর তাঁর এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করে তাঁর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। কেকেআর মেন্টর লিখেছেন, ‘‘আমি আমার সম্মাননীয় দলীয় সভাপতি জেপি নড্ডাজিকে অনুরোধ করেছি, আমাকে আমার রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে। যাতে আমার আসন্ন ক্রিকেটীয় কর্তব্য পালনে বেশি মনোযোগ দিতে পারি। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাকে মানুষের কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। জয় হিন্দ।’’ গম্ভীরের ওই পোস্টে স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তবে কি তিনি লোকসভা ভোটে দিল্লির আসনে আর লড়বেন না?
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপির তারকাপ্রার্থীদের নিয়ে জল্পনা চলছে। এর মধ্যে খাস দিল্লিতেই অভিনেতা এবং মোদী ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অক্ষয় খান্নাকে টিকিট দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছিল। এমনও বলা হয়েছিল যে, চাঁদনি চক থেকে অক্ষয়কে টিকিট দিতে পারে পদ্ম শিবির। অন্য দিকে, গম্ভীরের প্রাক্তন সতীর্থ ক্রিকেটার যুবরাজ সিংহকে নিয়েও শুরু হয়েছিল জল্পনা। তবে দিল্লি নয়, পঞ্জাবে অভিনেতা সাংসদ সানি দেওলের কেন্দ্র গুরদাসপুরে তাঁকে বিজেপির তরফে লোকসভা নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা চলছিল। এর মধ্যেই শুক্রবার একটি সংবাদ মাধ্যম জানায়, অক্ষয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হয়েছে, তিনি এখনই তাঁর বিনোদনের জগতের সীমার বাইরে পা রাখতে চান না। ঘটনাচক্রে একই দিনে যুবরাজও এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটারে ) পোস্ট করে জানান, তাঁকে নিয়ে গুরদাসপুরের আসন নিয়ে যে জল্পনা তা সত্য নয়। তিনি গুরদাসপুর থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন না। এই পরিস্থিতির মধ্যেই শনিবার সমাজ মাধ্যমে রাজনীতি থেকে অব্যাহতি চেয়ে পোস্ট করেন গম্ভীর। তবে গম্ভীরের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর গম্ভীরের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এই ঘটনাপ্রবাহের কোনও যোগ নেই।
আগামী ২২ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএল ক্রিকেট। অর্থাৎ, আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে যখন ভরপুর প্রচারপর্ব চলবে, তখন চলবে আইপিএলও। যেহেতু একদা কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্যাপ্টেন গম্ভীর এখন কেকেআরের মেন্টর, তাই তাঁকেও থাকতে হবে দলের সঙ্গে। বিজেপি সূত্রে খবর এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার সাংসদের পক্ষে দু’দিক সামলানো সম্ভব হবে না বলেই তিনি একটিকে বেছে নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালে গম্ভীর বিজেপিতে যোগদান করার পর তিনিই ছিলেন আপ শাসিত দিল্লিতে পদ্মের প্রধান মুখ। পূর্ব দিল্লি লোকসভা আসনে বড় ব্যবধানে জিতেওছিলেন তিনি। তাঁর নিকটবর্তী প্রার্থীর সঙ্গে তাঁর প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ছিল ৬ লক্ষ ৯৫ হাজার ১০৯। তবে গম্ভীরের রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর তাঁকে আর পূর্ব দিল্লির আসনে টিকিট দেওয়া হবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।