—প্রতীকী চিত্র।
বর্ধমান পূর্ব আসনে অসীম সরকারকে প্রার্থী করায় বিজেপির অন্দরে চাপা ক্ষোভ ছিল। বুধবার প্রার্থী বদলের দাবিতে বৈঠক করে সেই অসন্তোষ প্রকাশ্যে আনলেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। গত কয়েক দিনে পূর্বস্থলী, মেমারি এবং কালনার একাধিক জায়গায় প্রার্থী বদলের দাবিতে পোস্টার পড়েছিল। এমনকি অসীমের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ক্ষোভ প্রশমনে দলের ‘অভিমানী’ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অসীম। তাতে লাভের লাভ যে বিশেষ হয়নি, এ দিন তা স্পষ্ট হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
এ দিন সন্ধ্যায় কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া স্টেশনের কাছে একটি লজে বৈঠক করেন বিজেপির ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা-কর্মীদের একাংশ। ছিলেন ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সন্তোষ রায়। ছিলেন ননী সিংহ, প্রবীণ নেতা উদয় ঘোষ কৃষ্ণদেবপুর পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য দীপালি মণ্ডল, পুজা রাজবংশী, সান্ত্বনা পুরকায়স্থ, হাটকালনা পঞ্চায়েতের তারক দাস, বিশ্বজিৎ মণ্ডল-সহ তিন বিজেপি সদস্য। সন্ধ্যার পরে সভা শুরু হতেই কক্ষ ভরে যায়।
প্রসঙ্গত, ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে দলের তরফে কয়েকটি নাম উচ্চ নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দল প্রার্থী করে নদিয়ার হরিণঘাটার বিধায়ক অসীমকে। তার পরেই দলে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
এ দিন সভায় সন্তোষ বলেন, ‘‘ওঁকে (অসীম) প্যারাসুটের মতো নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও পরিকল্পনা ছাড়াই ওঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রার্থী করার আগে ওঁকে কয়েক মাস ধরে জেলার ভূগোল চেনানো উচিত ছিল। এই প্রার্থীকে বদল করতে হবে। বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, আমাদের ক্ষোভ কিছু রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।’’ তাঁর আক্ষেপ, যাঁরা ‘ভূমিপুত্র’ হয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রার্থী দিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই ঘটনা গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটেও ঘটেছিল। প্রার্থী নির্বাচন ঠিক মতো না হওয়ায় দলীয় কর্মীরা জেতার মানসিকতা নিয়ে ময়দানে নামেননি।
ননীর দাবি, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব এখানে এসে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করুন। তাঁরা জানুন, কাকে কর্মীরা প্রার্থী হিসেবে চান।’’
দলকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে উদয়ের বক্তব্য, ‘‘এর পরেও রাজ্য এবং জেলা নেতৃত্বের টনক না নড়লে মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন অনেক কিছু দেখা যাবে।’’ তবে ‘অনেক কিছু’ বলতে তিনি কী ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তা খোলসা করেননি উদয়। তবে বিক্ষুব্ধ নেতাদের অনেকে ওই আসনে নির্দল প্রার্থি দাঁড় করানোর পক্ষে বলে জানা গিয়েছে।
এই বৈঠক নিয়ে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রার্থী বদলের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের মতিভ্রম হয়েছে। প্রার্থী নির্বাচনে জেলা নেতৃত্বর কোনও ভুমিকা থাকে না। দল যাঁকে প্রার্থী করে, তাঁকে মেনে নিতে হয়। এটাই শৃঙ্খলা।’’