(বাঁ দিকে) অমরা রাম। মহম্মদ সেলিম (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরুর দু’ঘণ্টা সামান্য ভোটে মুর্শিদাবাদে এগিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী তথা দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই সময়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেলিম বলেছিলেন, ‘‘এ বার আর কেউ আমাদের শূন্য বলে টিপ্পনি কাটতে পারবে না!’’ কিন্তু দিনের শেষে দেখা গেল বঙ্গ সিপিএমের ‘আর্যভট্টদশা’ কাটল না। অন্য দিকে রাজস্থানের মতো রাজ্য থেকে এক জন জিতে সংসদে যাচ্ছেন। তিনি সিপিএমের রাজস্থান রাজ্য সম্পাদক অমরা রাম। তিনি সিকার কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে কংগ্রেসের সমর্থনেই জিতেছেন তিনি।
বাংলায় সিপিএম এ বার নবীন-প্রবীণের সংমিশ্রণ রেখেছিল প্রার্থিতালিকায়। দেখা গেল প্রবীণ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীদের মতো নবীন দীপ্সিতা ধর, সৃজন ভট্টাচার্যেরাও দাগ কাটতে পারেননি। সেলিম মুর্শিদাবাদে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বাকি প্রায় সকলেই তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, গত পাঁচ বছরে তিনটি ভোটে পরাস্ত হলেন সেলিম। তা-ও আবার তিনটি পৃথক পৃথক জায়গায়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে রায়গঞ্জে পরাস্ত হয়েছিলেন সেলিম। ২০২১ সালে চণ্ডীতলা বিধানসভা কেন্দ্রে তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। এ বার মুর্শিদাবাদে দ্বিতীয় হলেন তিনি। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের চূড়ান্ত ভোট শতাংশ প্রকাশ করেনি। ফলে কতগুলি আসনে সিপিএম জামানত রাখতে পারল, সেটাই এখন সব থেকে বড় কৌতূহল। তবে সেলিম এবং সুজন দু’জনেই তাঁদের আসনে জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন।
গত বার লোকসভায় সিপিএমের তিন জন সাংসদ ছিলেন। এ বার সেটা বেড়ে হয়েছে চার। কেরলে এক জন ছিলেন, এ বারও তাই রয়েছেন। তামিলনাড়ু থেকেও গত বারের মতো দু’জন সাংসদ পেয়েছে সিপিএম। এ বার নতুন বলতে রাজস্থান থেকে অমরা রাম।
ফল প্রকাশের পর সেলিম বলেছেন, ‘‘অনেক বিজ্ঞান কাজ করেছে। সেগুলো বসে পর্যালোচনা করতে হবে।’’ এ বারই প্রথম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লোকসভা ভোটে লড়েছিল বামেরা। পাশাপাশি দুই কেন্দ্রে লড়েছিলেন সেলিম এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কিন্তু ২৫ বছর পর বহরমপুরে অধীর পরাস্ত হয়েছেন। সেলিমের কথায়, ‘‘আমি মুর্শিদাবাদে নতুন। কিন্তু আমি আশা করেছিলাম অধীরবাবু জিতবেন। কিন্তু সেটা হল না।’’ সেলিম এবং অধীরের হার নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘এ বার নিশ্চয়ই ওঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করাটা থামাবেন। শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’’