—প্রতীকী ছবি।
আসন সমঝোতার জট ছাড়ানোর পথে এগোচ্ছে সিপিএম ও কংগ্রেস। আসন ধরে ধরে দু’পক্ষের বার্তা বিনিময়ে মীমাংসা সূত্র মিলছে বলেই সূত্রের খবর। রাজ্যের কোনও আসনেই যাতে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের মুখোমুখি লড়াই না হয়, সেই পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। সিপিএম এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা, আগামী সোমবারের মধ্যে ছবি পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে।
কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা রেখেই রাজ্যের ১৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বামফ্রন্ট। কংগ্রেসের তরফে আসনের তালিকা পাঠানো হয়েছে সিপিএমের কাছে। সূত্রের খবর, ডজ়নখানেক আসনে যাতে কংগ্রেস লড়তে পারে, সেই জায়গা তৈরির চেষ্টা করছে সিপিএম। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, সিপিএম ও প্রদেশ কংগ্রেস যৌথ ভাবে পরবর্তী পর্যায়ের তালিকা ঘোষণা করবেন এবং সমঝোতার বার্তা দেবেন। কিন্তু এআইসিসি সরাসরি এই সমঝোতার প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকতে চায়নি। রফার আলোচনা চলছে রাজ্য স্তরেই। রাজ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ঠিক যে রকম পরিস্থিতির মুখে পড়েছিল সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো তখন কংগ্রেসের সঙ্গে আসন-রফায় সরাসরি সম্মতি দেয়নি, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট নিজেদের মতো করে এগিয়েছিল। ভোটের ফল অনুকূলে না যাওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তিরস্কারের মুখেও পড়তে হয়েছিল রাজ্য সিপিএমকে। সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই পরে ঠিক হয়েছে, এ বার যৌথ ঘোষণার পথে না যাওয়াই ভাল। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির সম্মতির পরে কংগ্রেস তাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবে। বামফ্রন্ট বাকি আসনের জন্য তাদের প্রার্থীদের নাম জানাবে।
প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘পারস্পরিক দাবি-দাওয়া বিবেচনায় রেখে স্থানীয় ভাবে আমরা রফা করে নেওয়ার চেষ্টা করছি। সমস্যা কিছু থাকবে না বলেই মনে হয়।’’ সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যেরও বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা এগিয়েছে। আসনভিত্তিক সমঝোতা হয়ে যাবে।’’ তবে সূত্রের ইঙ্গিত, বামফ্রন্টে সিপিএম তাদের ভাগের আসন থেকে কংগ্রেসকে জায়গা দিতে তৈরি হলেও শরিকদের মনোভাব তেমন সহযোগিতামূলক নয়। সে ক্ষেত্রে শরিকদের হাতে থাকা কোনও আসনে কংগ্রেসের দাবি থাকলে শেষ পর্যন্ত ছবিটা তেমন দাঁড়াবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
সিপিএম অবশ্য বাম শরিকদের বোঝানোর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। বামফ্রন্টের বৈঠকে বৃহস্পতিবার প্রবল অশান্তি বাধিয়েছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক এবং সিপিআই নেতারা। তার পরে শুক্রবার সিপিআইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিআইয়ের কাছে এ বার বসিরহাট আসনটি চেয়েছে সিপিএম। এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, সিপিআই তাদের ভাগের তিনটি আসনেই লড়বে। বাম সূত্রের ইঙ্গিত, রবিবার আবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হতে পারে।