নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
সব কিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানমগ্ন হওয়ার ছবি যাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত না হয়, সেই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।
বুধবার তামিলনাডু সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কে বালকৃষ্ণণ দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে সিপিএম নেতা লেখেন যে, মোদী ব্যক্তিগত ভাবে কোথাও ধ্যানে বসতেই পারেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ধ্যানমগ্ন হওয়া বিভিন্ন প্রচারমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত করা হলে দেশে সপ্তম দফা ভোটের আগে তা নির্দিষ্ট একটি দল (বিজেপি)-কে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেবে। কমিশনের আদর্শ আচরণবিধি যাতে ভঙ্গ না হয়, সেই কারণে এই সম্প্রচার বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন বালকৃষ্ণণ।
একই আর্জি জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে কংগ্রেসও। বুধবার কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি এবং সৈয়দ নাসির হুসেন কমিশনের দফতরে যান। তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটির তরফে কমিশনের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কংগ্রেসেরও বক্তব্য, মোদীর ধ্যানে বসার ছবি সরাসরি সম্প্রচারিত হলে দেশে শেষ দফার ভোটের আগে কমিশনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হবে। বুধবার এই নিয়ে মোদীকে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “ধ্যান করবে তো ক্যামেরা নিয়ে কেন? লোকে পুজো ক্যামেরার সামনে ছবি তুলে করে?”
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৪৮ ঘণ্টার জন্য কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসবেন নরেন্দ্র মোদী। এর আগে দু’বার লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শেষে আধ্যাত্মিক সফরে বেরিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচার শেষে গিয়েছিলেন কেদারনাথ। ২০১৪ সালে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রতাপগড় দুর্গে। এ বার তিনি যাচ্ছেন দক্ষিণ ভারতে। সারা দেশ ঘুরে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে এসেছিলেন বিবেকানন্দ। মূল ভূখণ্ড থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি শিলায় বসে তিন দিন ধ্যান করেছিলেন তিনি। সেখানেই বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগর, আরব সাগরের মিলন হয়েছে। মনে করা হয়, সেখানেই আলোকপ্রাপ্ত হন বিবেকানন্দ। হিন্দু ধর্মে কথিত, যেখানে শিবের জন্য তপস্যা করেছিলেন পার্বতী, সেখানেই রয়েছে ওই শিলা। ওই শিলার উপর নাকি পার্বতীর পায়ের চিহ্নও রয়েছে। সেই শিলা— ‘ধ্যানমণ্ডপমে’ ধ্যানে বসবেন মোদী।