প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
‘মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেওয়া’ বনাম ‘মঙ্গলসূত্রের সম্মান’। কংগ্রেস মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র থেকে সোনার গয়না কেড়ে নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে চাইছে বলে নরেন্দ্র মোদী লাগাতার অভিযোগ তুলছেন। তার জবাবে আজ কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করল। কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মোদীকে কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি নিজের জীবনে মঙ্গলসূত্রের সম্মান করেননি, তিনি আজ মঙ্গলসূত্র নিয়ে কথা বলছেন!’’
লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণের পর থেকেই নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের ইস্তাহারে মুসলিমদের মধ্যে ধনসম্পদ বিলিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন। আজ মধ্যপ্রদেশের মোরেনা, উত্তরপ্রদেশের আগরায় প্রচারে গিয়েও একই সুরে অভিযোগ তুলে তিনি দাবি করেছেন, কংগ্রেসের ইস্তাহারে মুসলিম লিগের ছাপ রয়েছে। মা-বোনেদের সঞ্চয়ে কংগ্রেসের নজর পড়েছে। কংগ্রেস সোনার গয়না থেকে শুরু করে মঙ্গলসূত্রেও কর বসাতে চাইছে।
পাল্টা আক্রমণে গিয়ে কংগ্রেস আজ বলেছে, নরেন্দ্র মোদী এখন ‘চারশো পার’-এর কথা ভুলে গিয়েছেন। ছাতি ঠুকে ‘মোদী গ্যারান্টি’-র কথাও বলছেন না। তার বদলে বিদ্বেষপূর্ণ ভাষায় মেরুকরণকে হাতিয়ার করছেন। কারণ তিনি প্রথম দফায় ভোটগ্রহণের পরে বিপদ টের পেয়েছেন। তাই কংগ্রেসের ইস্তাহার নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। মোদীর কম বয়সে স্ত্রীকে ছেড়ে আলাদা থাকার দিকে ইঙ্গিত করে জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘সত্যমেব জয়তে’ নয়, ‘অসত্যমেব জয়তে’-ই নরেন্দ্র মোদীর স্লোগান। যে ব্যক্তি নিজের জীবনে মঙ্গলসূত্রের সম্মান করেননি, তিনি আজ মঙ্গলসূত্র নিয়ে কথা বলছেন!’’ তাঁর অভিযোগ, মোদীর দশ বছরের রাজত্বের ফল এই যে, দেড় কোটি পরিবারকে সোনার গয়না বন্ধক রেখে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের পরিবারগুলির মাথায় ১ লক্ষ কোটি টাকার বকেয়া ঋণের বোঝা।
মোদী আজ আগরায় অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস ওবিসিদের জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষিত আসন চুরি করে মুসলিমদের মধ্যে বিলি করতে চাইছে। পাল্টা অভিযোগে জয়রাম বলেছেন, মোদী সংরক্ষণ শেষ করে দিতে চাইছেন। তাই ২০২১-এ জনগণনা হওয়ার কথা থাকলেও এখনও জনগণনা করাননি। জাতগণনায় মোদীর আপত্তি কোথায় প্রশ্ন তুলে তাঁর অভিযোগ, মোদী অনগ্রসরদের জনসংখ্যায় ভাগ অনুযায়ী সংরক্ষণ দিতে চাইছেন না। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আজ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছেন, ‘‘আমি আপনার ভাষা শুনে অবাক হইনি, স্তম্ভিত হইনি। এটাই আপনার থেকে প্রত্যাশিত ছিল যে, প্রথম দফার ভোটের পরে বিজেপির খারাপ হাল দেখে আপনারা এই ভাষায় কথা বলতে শুরু করবেন।”
কংগ্রেসের ইস্তাহারে যা লেখা নেই, মোদী সেটাই বলছেন বলে দাবি করে খড়্গে মোদীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘আপনার উপদেষ্টারা আপনাকে ভুল পথে চালিত করছেন।’’ কংগ্রেস আজ দাবি করেছে, নরেন্দ্র মোদী বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, আর্থিক বৈষম্যের মতো দেশের আসল সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন।