—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা ভোটের কারণে বেসরকারি বাস মালিকদের থেকে বাস-মিনিবাস নেওয়ার কাজ শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। কলকাতা-সহ সংলগ্ন এলাকায় বাস-মিনিবাস ও বেসরকারি গাড়ি নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোটর ভেহিকল্স ইন্সপেক্টর (এমভিআই)-দের। কিন্তু, ভোটের কাজের জন্য যানবাহন জোগাড় করতে গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি দেখে চক্ষু চড়কগাছে তাঁদের। পরিবহণ দফতরের খাতায়কলমে যে সংখ্যক যানবাহন রয়েছে, রাস্তায় চলছে তার অনেক কম। সে কথা জানতে পেরেই কী ভাবে ভোট পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা।
কলকাতার মোট দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পরিচালনার জন্য বাস-মিনিবাস নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। এই দুই লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের জন্য পরিবহণের বন্দোবস্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বাস-মিনিবাস-সহ প্রয়োজনীয় যানবাহন নেওয়ার কাজ শুরু করেন পরিবহণ দফতরের এমভিআই-রা। এই কাজ করতে গিয়ে জানা যাচ্ছে, খাতায়কলমে শহর কলকাতার মধ্যে চলাচল করা বাস-মিনিবাসের সংখ্যা চার হাজার হলেও, আসলে প্রতি দিন রাস্তায় নামছে আড়াই হাজারের মতো বাস-মিনিবাস। এর থেকে যদি ভোটের কাজের জন্য বাস তুলে নেওয়া হয়, তা হলে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের মুখে পড়বেন। প্রায় দু’মাসের বেশি সময় ধরে লোকসভা ভোট প্রক্রিয়া চলবে রাজ্য জুড়ে। আর এত দীর্ঘ সময়ে রাস্তায় বেসরকারি বাস না থাকলে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হতে পারে সাধারণ মানুষকে। কারণ, ভোটের কাজে ৪৫০-৫০০টি বাসের প্রয়োজন হবে। এই সংখ্যক বাস তুলে নিলে যাত্রী পরিষেবার কী হবে, তা নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এমন পরিসংখ্যান হাতে পাওয়ার পর খোঁজ নিয়ে পরিবহণ দফতরের কর্তারা জেনেছেন যে, কোভিড সংক্রমণের সময়ে লকডাউন পর্বে অনেক বাস মালিকই আর নিজেদের বাস রাস্তায় নামাতে পারেননি। সেই সময়ে বেসরকারি পরিবহণ যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা থেকে উদ্ধার পাওয়া এখনও সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি, ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে কোনও বাস-মিনিবাস বা যানবাহন কলকাতায় চালানো যাবে না। সেই নির্দেশ কার্যকর করতেই বাসের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। আর এই সময়ে নতুন বাসও সে ভাবে নামাতে পারেননি বেসরকারি বাস মালিকেরা। তাই বাসের সংখ্যা গত চার বছরে ক্রমশ কমতে শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের নেতা টিটু সাহা বলেন, ‘‘আমরা অবশ্যই ভোটের প্রয়োজনে বাস দেব। কিন্তু রাস্তায় বাসের সংখ্যা কমে গেলে আমাদের অসুবিধার বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লকডাউনের পর বেসরকারি বাস মালিকরা আর তেমন অবস্থায় নেই যে, ৫০ হাজার টাকা করে ইএমআই দিয়ে নতুন বাস রাস্তায় নামাতে পারবেন। বাসের সংখ্যা বাড়াতে তাই রাজ্য সরকারকে বাস মালিকদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’’