—প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূল নেতা না কি বুথের বাইরে বসে ভোটারদের প্রভাবিত করছেন! অভিযোগ কানে আসতেই মঙ্গলবার গাজলের বিজলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে যান উত্তর মালদহ লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু। কিন্তু পৌঁছে দেখা গেল, তিনি অভিযুক্ত নেতা তথা তৃণমূলের দেউতলা পঞ্চায়েতের সদস্য এনতাজ হোসেন এবং তাঁর অনুগামীদের জড়িয়ে ধরলেন। খগেন বলেন, “বললাম, অশান্তি না করে ভোট হতে দিতে।’’ এন্তাজ বলেন, ‘‘জড়িয়ে না ধরে বিজেপি প্রার্থীর উপায় ছিল না। কারণ, উনি গত পাঁচ বছরে কাজ করেননি। মানুষ চটে আছে।’’
ঘটনাবহুল ছিল ওই লোকসভা কেন্দ্রের হবিবপুর। সেখানে রাধাকান্তপুরে আশা কর্মীদের দিয়ে ভোট দেওয়ানোর চেষ্টার অভিযোগ তুলে ভোটকর্মীদের আটকে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। সন্ধের পর থেকে রাধাকান্তপুর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গ্রামবাসী মিঠুন সিংহের দাবি, “রাস্তা, সেতুর দাবিতে পঞ্চায়েতে ভোট বয়কট করা হয়েছিল। তার পরেও সমস্যার সমাধানে প্রশাসন ব্যবস্থা না নেওয়ায় লোকসভা ভোটও বয়কট করা হয়। তবে প্রশাসন কিছু আশা কর্মীদের দিয়ে ভোট দেওয়ানোর চেষ্টা করে।’’
সে সময় ভোটকর্মীদের ইভিএম নিয়ে যাওয়া ঠেকাতে এলাকাবাসী মাটির রাস্তা কেটে দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ ভোটকর্মীদের উদ্ধারের চেষ্টা করলে মারমুখী জনতা। ইট ছুড়তে থাকে। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। সে সময় দুই মহিলা পুলিশকর্মী এবং পুলিশের এক সাব ইনস্পেক্টর (এসআই) আহত হন। পুলিশ লাঠি চালিয়ে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভোটকর্মীদের উদ্ধার করে বলে দাবি।
এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, পুলিশের লাঠির আঘাতে গ্রামের কিছু মহিলা জখমও হন। যদিও গুলি, লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পুলিশ, প্রশাসনের কর্তারা। জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদবকে বহু বার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজের। জেলাশাসক বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আহতদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
রতুয়াতেও কংগ্রেসের এজেন্টকে বুথে ঢুকতে বাধা দিয়ে মারধর, গ্রামবাসীদের গ্রামে আটকে রাখা, গ্রামের রাস্তায় বোমাবাজি করে ভয় দেখানোর মতো তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতারা।
এ দিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উত্তর মালদহে ৭৫.৯১ শতাংশ ভোট পড়ে। মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, “কিছু অভিযোগ মিলেছে। সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” দক্ষিণ মালদহে অবশ্য অভিযোগ বেশি নয়। এ দিন সকালে ইংরেজবাজারের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির বুথের বাইরে তৃণমূল ভোটারদের প্রভাবিত করে বলে অভিযোগ মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্রের। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।
মালদহ দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হানের অভিযোগ, কংগ্রেস-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের দু'জনকে মারধর করেছে। কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরীর অভিযোগ, সুজাপুর বিধানসভার মোজমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক বুথে তৃণমূল ‘রিগিং’ করছে। অভিযোগ মানেনি তৃণমূল।