Lok Sabha Election 2024

পরিবেশকে বাঁচানোর তাগিদ, চিঠি ২৬টি রাজনৈতিক দলকে

পরিবেশ রক্ষার তাগিদে লোকসভা নির্বাচনের মুখে সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে নির্বাচনী ইস্তাহারে বিষয়টি তুলে ধরতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের স্বীকৃত ২৬টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিল চন্দননগরের পরিবেশ আকাদেমি।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:৩৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

উদাহরণ ১: শ’য়ে শ’য়ে খাটালের গোবর ফেলা হয় ডানকুনি খালে। খাল কার্যত গোবর নদী। বহু আন্দোলন, মামলার ফলে অবশেষে খাল সংস্কার হলেও তাতে গোবর ফেলা চলছেই। ওই খাল মিশেছে গঙ্গায়।

Advertisement

উদাহরণ ২: চন্দননগর পুরএলাকায় আস্ত আমবাগান পুড়িয়ে দেওয়া হল। ধরা পড়েনি কেউ। চতুর্দিকে ইচ্ছেমতো গাছ কাটা চলছেই।

উদাহরণ ৩: পুকুর ভরাট অব্যাহত। কিছু ক্ষেত্রে বোজানো জলাশয় আগের অবস্থায় ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও কার্যকর হচ্ছে কই! অসংখ্য পুকুর মজা।

Advertisement

উদাহরণ ৪: ধর্মীয়, সামাজিক, পারিবারিক উৎসবে দুমদাম বাজি, বক্সের তাণ্ডব রোজনামচা!

উদাহরণ ৫: নদ-নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি, মাটি তোলা চলছে। মাঝে মধ্যে ধরা হয় দু’এক জন নেহাত চুনোপুঁটিকে। ইদানীং গঙ্গার উপরে এই অত্যাচার কমলেও আগের পরিস্থিতি ফিরবে না তো, প্রশ্ন আছে।

জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে! এর খারাপ প্রভাব নিয়ে পরিবেশবিদরা শঙ্কিত। পরিবেশের ভালমন্দ নিয়ে যাঁরা ঘাঁটাঘাঁটি করেন, তাঁদের একাংশের অভিযোগ, পরিবেশ সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ বহু ক্ষেত্রেই হয় না। রাজনৈতিক দলগুলি পরিবেশ নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয়। এই অবস্থায় নির্বিচার অত্যাচারের বলি হচ্ছে পরিবেশ। উপরের উদাহরণগুলি হুগলি জেলার। অভিযোগ, এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, দেশের নানা প্রান্তেই আক্রান্ত পরিবেশ।

পরিবেশ রক্ষার তাগিদে লোকসভা নির্বাচনের মুখে সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে নির্বাচনী ইস্তাহারে বিষয়টি তুলে ধরতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের স্বীকৃত ২৬টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিল চন্দননগরের পরিবেশ আকাদেমি। সংগঠনের সদস্যেদের খেদ, পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশ জুড়ে বায়ু, জল, জঙ্গল, পাহাড়ের উপরে হানাদারি চলছে। অবস্থা না বদলালে অর্থনীতি থেকে আগামী প্রজন্মের সামনে সমূহ বিপদ! নির্বাচন প্রক্রিয়া যাতে পরিবেশবান্ধব হয়, সে ব্যাপারেও সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।

আকাদেমির পক্ষে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পরিবেশের বাঁচানোর কথা গত পনেরো বছর ধরে আমরা রাজনৈতিক দলগুলিকে পই পই করে বলছি। কিছু দল নির্বাচনী ইস্তাহারে পরিবেশকে ঠাঁই দিলেও ভোট মিটলেই ভুলে যায়।’’

চিঠিতে উল্লিখিত নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে গঙ্গা-সহ বিভিন্ন নদী ও উপকূলের দূষণ, জলাশয় সংরক্ষণের অভাব, ভূগর্ভ থেকে অবাধে জল তোলা, শিল্পের দূষণ, মেডিক্যাল বর্জ্যের প্রতিস্থাপনের হাল, অরণ্য ধ্বংস, অতিরিক্ত প্লাস্টিক নির্ভরতা, জীব-বৈচিত্র রক্ষায় উদাসীনতা, বেআইনি বাজি তৈরির রমরমা ইত্যাদি। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, সেই ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। বরং কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রক বা দফতর এবং পুরসভা বা পঞ্চায়েত ব্যবস্থা সত্ত্বেও পরিবেশের উপরে যথেচ্ছাচার অব্যাহত। পরিবেশের ক্ষতি হলে আখেরে মানুষের ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী। সেই দিকে তাকিয়ে নির্দিষ্ট আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে যাতে পরিবেশ বাঁচানো যায়, তার জন্য শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা জরুরি বলে তাঁদের অভিমত।

রাজনীতির কারবারীরা কতটা উদ্যোগী হবেন, বলবে সময়। তবে তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করছে পরিবেশ তথা জীবকূল বা মানুষের ভাল থাকার উপায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement