—প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে, ভারত বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি বলে মোদী সরকারের সাফল্য দাবি। অন্য দিকে, চড়া বেকারত্বের হিসাব তুলে ধরে বিরোধীদের তির। লোকসভা ভোটের মুখে এই চাপানউতোরের মধ্যেই শনিবার এবিপি নেটওয়ার্কের ‘আইডিয়াজ় অব ইন্ডিয়া ৩.০’ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানাগড়িয়ার দাবি, ভারতীয় অর্থনীতির সমস্যা কর্মীদের কম উৎপাদনশীলতা, বেকারত্ব নয়। কারণ তাঁদের হাতে কাজ থাকলেও, তা হয় স্বল্প সময়ের জন্য এবং কম বেতনের। সেগুলি তাঁদের দক্ষতা ব্যবহারেরও সুযোগ দেয় না। অর্থনীতিবিদ এবং বর্তমানে ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান পানাগড়িয়া ওই মঞ্চ থেকে শ্রম বিধি, কৃষি আইন থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের মতো মোদী সরকারের প্রস্তাবিত বিভিন্ন সংস্কারের পথে অটল থাকারও সওয়াল করেন।
তাঁর বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল, ‘কর্মসংস্থান কী ভাবে বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাতে পারে, তার অর্থনৈতিক চর্চা’। সভার সঞ্চালক বলেন, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি এবং সম্ভাবনা যতটা অবাক করে, তার সঙ্গে কর্মসংস্থান জুড়লে ততটা করে না। এই প্রসঙ্গেই পানাগড়িয়ার দাবি, বিতর্ক যতই চলুক দেশে বেকারত্ব বেশি নয়। কেন্দ্রীয় তথ্য অনুযায়ী মাত্র ৩-৪%। তিনি বরং কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপযোগী করে ব্যবহার করতে না পারার সমস্যা তুলে ধরেন। বলেন, ‘‘উৎপাদনশীলতা কম। যে কাজ একজন করতে পারে, সেটা হয়তো দু’তিন জনে করছেন। তাই ভাল বেতনে বেশি উৎপাদনশীল কাজ তৈরিই প্রধান চ্যালেঞ্জ।’’ তাঁর দাবি, হাতে গোনা কিছু ক্ষেত্রে বিপুল মূলধন ঢালা হয়, অথচ কর্মী সেখানে সামান্য। যে কৃষি এবং ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পে বিপুল কর্মী নিযুক্ত, সেখানে পুঁজি কম বা প্রায় নেই। এটাও উৎপাদনশীলতা কমায়। পুঁজি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাই সঠিক নীতি প্রণয়নে জোর দেন তিনি। সওয়াল করেন অর্থনীতিকে আরও খুলে দেওয়ারও।
কেন্দ্রীয় শ্রম বিধি নিয়ে কর্মী সংগঠনগুলি আপত্তি তুললেও, পানাগড়িয়া বলেন শ্রম বিধি সংস্কার জরুরি। ভারতীয় অর্থনীতির রক্ষণশীলতাও কমাতে হবে।