(বাঁ দিক থেকে) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
‘‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপরাষ্ট্রপতিকে, সাংবিধানিক পদকে নিয়ে মশকরা করেন! আরে কল্যাণ ব্যানার্জি, শরম করো, শরম করো, শরম করো। আপনি সাংসদ। শ্রীরামপুরের জনপ্রতিনিধি। উপরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মজা করেন!’’
শ্রীরামপুরের রাস্তা জলে ভরে যায়। নালার সংস্কার হয় না। কিন্তু এখানে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়। ওগুলো ঘুষের টাকা। যখন আমরা ধরি, তখন মমতাদিদি বলেন, ইডির অপব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতি যে-ই করবেন, তাঁকেই ধরব। আপনি আঁচলে লুকিয়ে রাখলেও তাঁকে জেলে ভরব।
‘‘মমতাদিদি চালাকি করছেন। মোদীজি চা পাঠাচ্ছেন। সেখানে নিজের ছবি সাঁটাচ্ছেন মমতাদিদি। আরও পাঁচ কেজি বেশি চাল দেবেন মোদীজি। কিন্তু সিন্ডিকেট দিয়ে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে বাংলায়।’’
তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘শ্রীরামপুরকে বাঁচাতে কল্যাণকে হারিয়ে কবীরকে জয়ী করুন। প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী করুন। বাংলা থেকে ৩০ আসন দিন।’’
‘‘আঁচলে লুকিয়ে নিলেও জেলে ঢোকাব দুর্নীতিগ্রস্তদের। কাউকে লুকোতে পারবেন না।’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
মা-মাটি-মানুষকে কটাক্ষ করে শাহ বললেন, ‘‘বাংলা এখন মৌলা-মাদ্রাসা-মাফিয়ার ভূমিতে পরিণত হয়েছে।’’
অমিত শাহ বলেন, ‘‘হীরকরাজার দেশে’ সিনেমা তৈরি করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল সেই সিনেমা। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ক্ষমতায় এসেছেন, সত্যজিৎ তখন বেঁচে নেই, থাকলে তিনি ‘হীরকরানির দেশে’ সিনেমা বানাতেন। ভাই-বোন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হীরকরানির দেশে।’’
‘‘আমি মমতাদিদি এবং আপনার ভাইপোকে বলে যাচ্ছি, যত পারেন জোর করুন, সিএএ হবেই।’’
‘‘কাশ্মীরে আর অশান্তি হয় না। এখন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে স্বাধীনতার জন্য স্লোগান ওঠে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অশান্তি হয়। মোদী জমানায় এটাই সাফল্য। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের হওয়া উচিত কি না? শ্রীরামপুরের মাটিতে বলছি, রাহুল গান্ধী, সনিয়া গান্ধী আপনারা ভয় পেলে পান। কিন্তু পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমরা নিয়েই ছাড়ব।’’
‘‘গ্যারান্টি দিচ্ছি, শ্রীরামপুর কবীরশঙ্কর বোসকে জেতান, অনুপ্রবেশকারী ছেড়ে দিন, পাখিও উড়ে এসে বসতে পারবে না।’’
‘‘শ্রীরামপুরের জনতা, বাংলার মানুষ ভোট দেওয়ার সময় ভাববেন, কার সঙ্গে লড়াই হচ্ছে। এক দিকে রয়েছে পরিবারবাদী পার্টি। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান। সনিয়া গান্ধী রাহুল বাবাকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে চান। অন্য দিকে রয়েছে, গরিব চা দোকানির বাড়িতে জন্মানো মহান নেতা নরেন্দ্র মোদী।’’
সভায় বলতে শুরু করলেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, ‘‘শ্রীরামপুরের মানুষের গলার কী হল? এমন আওয়াজে হবে না। মোদীজিকে ৪০০ পার করাতে হবে। কবীরশঙ্কর বসুকে জেতাতে হবে।’’
বুধবার শ্রীরামপুর লোকসভার বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসুর সমর্থনে মশাট বাজারে নির্বাচনী সভায় উপস্থিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হবে না। বরং ১০০ টাকা বেশি মিলবে। এমনই ঘোষণা করেছেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘মমতাদিদি বলেন, বিজেপি এলে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি, বিজেপি কোনও প্রকল্প বন্ধ করবে না। আমরা লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ১০০ টাকা বাড়িয়ে মহিলাদের দেব।’’
মঙ্গলবার লোকসভা ভোটের প্রচারে বনগাঁ থেকে দুর্নীতি ইস্যুতে খোঁচা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘সবাইকে জেলে যেতে হবে।’’ নাম না করে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে টাকা নিয়ে প্রশ্নকাণ্ডে নিশানা করেন শাহ।