ব্রাত্য বসু এবং কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূলে পদ হারানো কুণাল ঘোষের পাশে দাঁড়ালেন ব্রাত্য বসু। জানালেন, কুণাল প্রসঙ্গে আশা ছাড়েননি তিনি। তাঁর বিশ্বাস, দল এবং কুণালের মধ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, দ্রুত তার কোনও না কোনও সমঝোতা-সূত্র বেরোবে। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে।
বৃহস্পতিবার প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ব্রাত্য। সেখানেই অনুষ্ঠানের শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। তাঁকে কুণালের সঙ্গে দলের সংঘাত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে খোলাখুলি কিছু বলতে চাননি। জানান, এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ব্রাত্য বলেন, ‘‘যাঁর স্বাক্ষরিত চিঠি কুণাল পেয়েছেন, এ বিষয়ে সেই ডেরেক ও’ব্রায়েন এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। তাই আমিও কিছু বলব না। এটি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ডেরেক কিছু বললে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি কিছু বলতে পারি।’’
কুণাল নিয়ে ব্রাত্য আরও বলেন, ‘‘কুণাল আমার সহকর্মী, আমার বন্ধু। আমি মনে করি উনি দলের মধ্যেই আছেন। কুণাল এবং দল কী ভাবে পরস্পরের সঙ্গে বিষয়টি সমঝোতা করবে, তা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু কুণাল জানপ্রাণ দিয়ে মুখপাত্র হিসাবে দলের হয়ে কথা বলেন। আমি বিশ্বাস করি, এ বিষয়ে সমঝোতা-সূত্র মিলবে। কোনও একটা বন্দোবস্ত হবে। তবে আমি এটা আশা করছি মাত্র। কোনও তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা বলছি না।’’
সম্প্রতি একটি রক্তদান শিবিরে গিয়ে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা শোনা যায় কুণালের মুখে। ওই মঞ্চে তাপসও ছিলেন। এর পরেই দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। দলের পদক্ষেপ জানিয়ে ডেরেকের স্বাক্ষরিত চিঠি যায় কুণালের কাছে। এর পর বৃহস্পতিবার তৃণমূলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও কুণালের নাম বাদ দেওয়া হয়। যা নিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন কুণাল। ক্যামেরার সামনে কেঁদেও ফেলেন। জানান, এত দিন ধরে দলের হয়ে এত ভাবে লড়াই করার পর এটা তাঁর প্রাপ্য নয়। এ প্রসঙ্গে ব্রাত্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কুণাল বিরোধী প্রার্থীর প্রশংসা করেছেন কি না, আমি জানি না। কিন্তু আমাদের প্রার্থীর জয় চেয়েছেন, কলকাতা উত্তরের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় চেয়েছেন তিনি।’’
উল্লেখ্য, ভোটের মুখে দলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তাপস। তার আগে তাঁকে বোঝাতে তাপসের বাড়িতে তৃণমূলের তরফে গিয়েছিলেন ব্রাত্য এবং কুণাল। কিন্তু তাপসকে বুঝিয়ে দলে রাখতে পারেননি তাঁরা। দলবদলের পর সুদীপের বিরুদ্ধে উত্তর কলকাতায় তাপসকে প্রার্থী করে বিজেপি। কিন্তু তাপসের সঙ্গে কুণালের সম্পর্কে চিড় ধরেনি।
ব্রাত্য ছাড়া এর আগে তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেনও কুণালের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘দলের প্রতি কুণালের অবদান অস্বীকার করা যায় না। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি দলের মুখপাত্র হিসাবে কড়া ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেছেন। এটা কুণালের প্রাপ্য নয়।’’ এ বার ব্রাত্যও কুণালের পাশেই দাঁড়ালেন।