—প্রতীকী ছবি।
গত লোকসভায় জলপাইগুড়িতে বিজেপির সর্বাধিক ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভায় চার শতাংশ ভোট কমে গেল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে এই বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে ছিল ৮৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটে। এই বিধানসভায় তখন বিধায়ক ছিলেন তৎকালীন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। গত লোকসভা ভোটের দু’বছর পরে সেই আসনে দাঁড়িয়ে তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেব হারলেও ব্যবধান কমে দাঁড়ায় ২৭ হাজারের আশপাশে। পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভা থেকে বিধানসভায় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির ভোট শতাংশও কমেছিল। গত লোকসভায় এই বিধানসভায় ভোট পড়েছিল প্রায় ৮৪ শতাংশ এবং ২০২১ সালের বিধানসভায় ৮৩ শতাংশের সামান্য বেশি। এ বারের লোকসভায় ভোটদানের হার একেবারে চার শতাংশ কমে হয়েছে ৮০ শতাংশের সামান্য বেশি। সেটাই মাথাব্যথা হয়েছে বিজেপির। ভোটদানের হার কম মানে কি গেরুয়া শিবিরের ভোটও কমতে পারে? বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, গত দু’টি ভোটের প্রবণতা তেমনই ইঙ্গিত করে। যদিও জলপাইগুড়ির লোকসভারই অন্য আসনে ভোটদানের হার কম হওয়ায় চিন্তিত তৃণমূলও। ভোটপর্ব মেটার পরে কোনও বিধানসভা বা এলাকায় কত শতাংশ ভোট পড়েছে তার চেয়ে যা প্রবণতা তাতেই ফলাফলের ইঙ্গিত লুকিয়ে রয়েছে বলে দাবি রাজনৈতিক দলগুলির।
গত লোকভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ির আসনে একমাত্র রাজগঞ্জ বিধানসভাতেই এগিয়েছিল তৃণমূল। ১ লাখ ৮৪ হাজারের কিছু বেশি ভোটে লোকসভা আসন জিতেছিল বিজেপি। রাজগঞ্জ বিধানসভায় তৃণমূল এগিয়ে ছিল ৪৩২০ ভোটে। সে বার রাজগঞ্জে ভোট পড়েছিল ৮৮ শতাংশেরও বেশি। সেই রাজগঞ্জে এ বার ভোট পড়েছে ৮৬ শতাংশ। রাজগঞ্জের এক তৃণমূল নেতার দাবি, “যে টুকু ভোট কম পড়েছে তাতে আমাদের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। আমরা সাংগঠনিক ভাবে ভোট করিয়েছি। বিজেপি ভোট করাতে পারেনি।”
যদিও অন্য সমীকরণ শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরে। তৃণমূল নেতাদের গত লোকসভায় এগিয়ে থাকা এবং বিধানসভায় ব্যবধান বাড়ানো রাজগঞ্জকে এ বারে ‘পাখির চোখ’ করেছিল তৃণমূল। রাজগঞ্জে তৃণমূলের একাধিক শক্তিশালী নেতা রয়েছেন। সবাইকে কাজে লাগিয়ে রাজগঞ্জ থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকতে চেয়েছে তৃণমূল। সেই ব্যবধান করতে হলে ভোটদানও বাড়াতে হত। উল্টে গতবারের থেকে ভোটদান কমে যাওয়ায় তৃণমূলের লক্ষ্য কতটা পূরণ হবে তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে।
শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূলের জলপাইগুড়িতে সংগঠন দেখার দায়িত্বে থাকা গৌতম দেব বলেন, “কোনও অঙ্ক বা সমীকরণ পরে বোঝা যাবে। তবে জলপাইগুড়ির মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।”
অন্য দিকে, মালবাজারে চা বলয়ে ভোট কম পডেছে। সেখানেও চার শতাংশের বেশি ভোট কমেছে। গতবার প্রায় ৮৩, এ বারে ৭৯ শতাংশ। চা বলয়েও ভোট কম হয়েছে। তাতে বিজেপি নেতাদেরই কপালে ভাঁজ পড়েছে। গতবার ২৪ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। কম ভোট পড়ার প্রভাব কী হবে তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে গেরুয়া শিবিরে।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “গতবারের থেকে কম ভোট পড়েছে ঠিকই, কিন্তু যে ভোট পড়েছে তার বেশিটাই বিজেপি পাবে, বেশিরভাগ বাসিন্দাই মোদীকে ভোট দিতে চেয়েছেন। তাই দিয়েছেন।”