—প্রতীকী চিত্র।
গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভায় বিজেপির থেকে প্রায় ৪৩ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভায় সেই ব্যবধান কমে দাঁড়ায় প্রায় ৩২ হাজারে। আবার ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই বিধানসভার অধীনে থাকা একটি পঞ্চায়েতও দখল করতে পারেনি বিজেপি। অথচ ২০২১ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। ফলে লোকসভায় এই বিধানসভা এলাকায় ফল কেমন হবে, সেই অঙ্ক কষছে দুই ফুল শিবির।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব কেন্দ্রে সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট প্রার্থীকে পিছনে ফেলে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী সমীরকুমার পোদ্দার। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে শুধু এই বিধানসভাতেই বিজেপির কাছে ৪৩ হাজার ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। ২০২১-এর বিধানসভায় কিছুটা ভোট ব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল।
এ বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হয়েছে। আবার সেই আইন যে নিঃশর্ত নয়, তা জানিয়ে পাল্টা প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। ফলে জেলার দক্ষিণে মতুয়া বলয়ে থাকা অন্যতম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারেরা এ বারের লোকসভায় কোন ফুলের দিকে ঝুঁকবেন, তার উপরে অনেকটাই নির্ভর করছে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের ফল।
ইতিমধ্যেই রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর-পূর্ব বিধানসভার তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক সমীরকুমার পোদ্দার ভোট প্রচার চালাচ্ছেন, পথসভা করছেন। তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বিগত দিনে বিভিন্ন নির্বাচনের সময় দলের গোষ্ঠী কোন্দল নির্বাচন জয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যে কারণে এ বারের লোকসভা নির্বাচনের আগে রানাঘাট ২ ব্লককে সাংগঠনিক ভাবে দ্বিবিভক্ত করা হয়েছে। তাতে অনেকটাই গোষ্ঠী কোন্দল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে।
রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী বলেন, ‘‘আমি তৃণমূল পরিবারে নতুন সদস্য। প্রার্থী হব বলে দলে আসিনি। আমি চাই দলের প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে। তা ছাড়া রানাঘাটের বিজেপির সাংসদ এত দিন মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। কোনও উন্নয়নে তিনি করেননি। তাই নিশ্চিত ভাবেই মানুষ এ বার আমাদেরকে সমর্থন করবে।’’ পাল্টা বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘মুকুটমণি অধিকারী আমাদের দলে এত দিন থাকলেও, কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যেত না। তাঁর নিজের বিধানসভার এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে চেনেন না। সুতরাং গত নির্বাচনে যে নির্বাচনের ব্যবধানে আমি জয়ী হয়েছিলাম, এ বার তার থেকেও বেশি ভোট দিয়ে মানুষ বিজেপিকে জেতাবেন।’’
বাস্তবে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভায় মতুয়া ও উদ্বাস্তু ভোটব্যাঙ্ক শেষ পর্যন্ত কোন ফুলকে সমর্থন জানাবে, ভোট কাটাকুটির হিসেবে কোন ফুল বাড়তি সুবিধা নেবে, সেই অঙ্ক কষতেই ব্যস্ত রাজনৈতিক মহল।