কাঁথিতে উদ্ধার বোমা। নিজস্ব চিত্র।
একদিকে এক ব্লক এলাকায় বুধবার বিজেপির প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, পাশের ব্লকেই এ দিন উদ্ধার হচ্ছে বোমা!
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী। দোলের আবহে সোম, মঙ্গলবারের পরে বুধবার তিনি পুরোদমে প্রচার শুরু করেন। সকাল থেকে কাঁথি এবং খেজুরি বিধানসভা এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিজেপি প্রার্থী। সকালে কাঁথি শহর সংলগ্ন চাঁদবেড়িয়া গ্রামে প্রসাদ বিতরণ কর্মসূচির সূচনা করেন। পরে সৌমেন্দু যান ভগবানপুর-২ ব্লকের ভূপতিনগরে। সেখানে তিনি বিজেপির একটি নতুন দলীয় কার্যালয় সূচনা করেন এবং পদযাত্রায় অংশ নেন সৌমেন্দু। এরপর খেজুরি-২ ব্লকের খেজুরিতে পদযাত্রায় অংশ নেন তিনি। পরে খেজুরি-৫ মণ্ডলের উদ্যোগে কার্যকর্তাদের নিয়ে সম্মেলন হয়। সেখানে লোকসভা ভোটে দলের কর্মীদের কী ধরনের রণকৌশল হওয়া দরকার, সে ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন সৌমেন্দু।
এ দিন সন্ধ্যায় উত্তর কাঁথি বিধানসভার ভাজাচাউলিতে মহোৎসব কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন তিনি। এদিন সৌমেন্দু সাধারণ মানুষের সঙ্গেও জনসংযোগ করেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শোনেন তিনি। পরে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘মানুষ দু’হাত ভরে আশীর্বাদ করছেন। যেখানেই যাচ্ছি সাধারণ মানুষ শুধু তৃণমূলের চুরি আর দুর্নীতির অভিযোগ শোনাচ্ছেন। সাধারণ মানুষ কোনওভাবেই লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করবে না।’’
এদিকে এ দিন বিজেপি প্রার্থীর প্রচার শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগে খেজুরি-১ ব্লকের ঠাকুরনগর থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। একটি ফাঁকা মাঠে বেশ কয়েকটি তাজা বোমা পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। খেজুরি থানার পুলিশ গিয়ে ১৩টি তাজা বোমা উদ্ধার করেন। বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করতে পাঠানো হয়েছে। এদিন বিকেলেও ভগবানপুর-২ ব্লকের চিড়াকুঠি গ্রামেও প্রচুর বোমা উদ্ধার করে ভূপতিনগর থানার পুলিশ। স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়ির পুকুরে বোমা রাখা হয়েছে বলে জানতে পারেন এলাকাবাসী। ভূপতিনগর থানার পুলিশ পুকুরের জল শুকিয়ে ২৩টি বোমা উদ্ধার করে। দুটি ঘটনাতেই কোথা থেকে এসব বোমা এল এবং কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত— সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি পুলিশ। কাঁথির এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, ‘‘ঠাকুরনগরে ফাঁকা মাঠে কয়েক দিন ধরে বোমাগুলি পড়েছিল বলে জানতে পারা গিয়েছে। আর ভূপতিনগরে পুকুরে জলের তলায় ছিল বোমা। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’
বোমা উদ্ধারের ঘটনায় বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলছেন, ‘‘পুলিশকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি কর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে। তার জন্যই কোথাও ফাঁকা মাঠে, আবার কোথাও পুকুরে বোমা উদ্ধারের নাটক সাজাচ্ছে পুলিশ। দুটো ঘটনাই তৃণমূলের কর্মীরা ঘটিয়েছে।’’ যদিও তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলেন, ‘‘খেজুরি, ভগবানপুরের মতো এলাকায় অস্ত্র আর বোমা মজুত করছে বিজেপি। জেলার পুলিশ সুপারকে সমস্ত এলাকায় অস্ত্র এবং বোমা উদ্ধারের দাবি জানিয়েছি।’’