অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা নিয়ে বিজেপির যে কোনও নেতাকে তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা গেল, রাজ্য বিজেপি সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে অভিষেকের কাছে সময় জানতে চাইল। তার অব্যবহিত পরেই স্থান এবং কাল জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের সেনাপতি।
বৃহস্পতিবার এই পুরো ‘টরেটক্কা’ চলেছে এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টের মাধ্যমে। এখন দেখার, সমাজমাধ্যম থেকে বেরিয়ে এই যুদ্ধ বাস্তবেও শুরু হয় কি না।
বৃহস্পতিবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে অভিষেক লেখেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে ১ পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমি যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’’
তার পরেই রাজ্য বিজেপির এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিজ্ঞাপন পোস্ট করে লেখা হয়, ‘‘আপনি আপনার সুবিধামতো স্থান ও সময় জানান। আমরা আমাদের যুব মোর্চার কোনও এক জন কর্মীকে পাঠিয়ে দেব বিতর্কের জন্য। আপাতত এটা (বিজ্ঞাপন) পড়ে নিন।’’ বিজেপির পোস্টে অভিষেকের নাম উল্লেখ করা হয়নি। সেই পোস্টটি ‘রিপোস্ট’ করে অভিষেক আবার লিখেছেন, ‘‘আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টের সময় ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাবের মাঠে। দয়া করে রেগা ও আবাস যোজনার শ্বেতপত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। দেখা হবে।’’
লোকসভা ভোটে বাংলার মানুষের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনাকেই প্রচারের মূল ‘হাতিয়ার’ করতে চাইছে তৃণমূল। এ হেন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই বিজ্ঞাপনে দু’টি বিষয় রয়েছে। এক, বাংলার মানুষের জন্য কোন কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কত টাকা খরচ এবং বরাদ্দ হয়েছে। দুই, রাজ্য সরকারের ‘অনীহা’র জন্য কত প্রকল্প থেকে বাংলার মানুষ বঞ্চিত। এই বিজ্ঞাপনকে লক্ষ্য করেই অভিষেক তাঁর সকালের পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে।’’
গত রবিবার ব্রিগেডে তৃণমূলের ‘জনগর্জন’ সভা থেকেও নথি দেখিয়ে অভিষেক দাবি করেছিলেন, বেশ কিছু কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করছে না কেন্দ্র। এবং তা শুরু হয়েছে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হারের পর থেকে। তৃণমূলের সেনাপতির ব্যাখ্যা, ভোটে হারের ‘বদলা’ নিতে বাংলার মানুষকে ভাতে মারছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বৃহস্পতিবার থেকেই জেলায় নির্বাচনী জনসভা শুরু করছেন অভিষেক। তাঁর প্রথম সভা রয়েছে জলপাইগুড়ি লোকসভার ময়নাগুড়িতে। সেই মাঠেই বিজেপির প্রতিনিধিকে আসার আহ্বান জানিয়ে রাখলেন অভিষেক। পদ্মশিবির কি কাউকে পাঠাবে? মুখোমুখি তর্ক কি হবে? তেমন হলে তা বাংলার রাজনীতিতে বেনজির ঘটনা হিসেবেই দেখা হবে। এই ধরনের মুখোমুখি তর্ক চ্যানেলে হয়ে থাকে। কিন্তু তাতে অভিষেকের মতো দলীয় পদমর্যাদায় উচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত নেতারা সাধারণত করেন না। এখন দেখার, বিজেপি ময়নাগুড়ির মাঠে সত্যি সত্যিই কাউকে পাঠায় কি না। পাঠালে সেই মুখোমুখি তর্ক কেমন হয়।