কর্মীদের সঙ্গে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। ছবিঃ অভিজিৎ অধিকারী।
দলের একাংশের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও পুরনো মুখেই ভরসা রাখল বিজেপি। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরে অবশ্য দলীয় কর্মীদের মধ্যে ‘অসন্তোষ’ ভুলে উচ্ছ্বাসই দেখা গিয়েছে। রবিবার বিষ্ণুপুর শহরে টোটোয় চড়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে গিয়ে বৈঠক করেন ওই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। কর্মীরা মিষ্টি খাইয়ে, কেক কেটে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।
এ দিকে, জেলায় না থাকলেও বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রায় প্রতিটি মণ্ডলে ওই কেন্দ্রের প্রার্থী সুভাষ সরকারের নামে বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দেন কর্মীরা। শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখনও।
কোন সমীকরণে ফের প্রার্থী হিসেবে দলের আস্থা জোটালেন সৌমিত্র ও সুভাষ? বিজেপির একাংশের ব্যাখ্যা, প্রথম বার সাংসদ হয়েই কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর পদ পান সুভাষ। জেলায় তাঁর হয়ে প্রচারে এসেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের যে সুভাষের প্রতি আস্থা রয়েছে, নানা ঘটনায় তা সামনে এসেছে বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। দলের একাংশ সুভাষের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে বিজেপি। এমনকি, প্রার্থী ঘোষণার দিনও বাঁকুড়ায় সুভাষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে বাঁকুড়ার মাচানতলায়। দল থেকে বহিষ্কৃত কিছু প্রাক্তন বিজেপি কর্মী ওই বিক্ষোভে ইন্ধন দেন বলে দলীয় সূত্রে দাবি।
বিজেপির এক নেতা বলেন, “এক জন প্রতিমন্ত্রীকে তাঁর নিজের এলাকায় দাঁড়াতে না দেওয়াটা দলের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিকেই বোঝায়। বিজেপি সেই বার্তা দিতে চায়নি। তাই কোনও বিরোধিতাকে আমল দেওয়া হয়নি।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “সুভাষদার হয়ে ভোট করাতে দলের প্রতিটি কর্মী মুখিয়ে রয়েছেন। তাই
প্রার্থী হিসেবে তাঁর না ঘোষণা হওয়ার পরে কার্যত উৎসব শুরু হয়েছে দলের অন্দরে।”
দলের তরফে বার বার ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে সৌমিত্রকেও। পড়েছে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টারও। তবে কোনও ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের গুরুত্ব দেয়নি দল। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, কেউ কেউ বিরোধিতা করলেও সৌমিত্রের রাজনৈতিক দক্ষতার কথা সবাই জানেন। তৃণমূলের ভোটের একাংশও নিজের দিকে টেনে আনার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, “সৌমিত্রকে প্রার্থী করায় আমরা সবাই খুশি। রাজনৈতিক ভাবে এর তাৎপর্যও রয়েছে। জয় নিয়ে আমাদের কোনও সংশয়ই নেই।”
তবে এ সব প্রচারের গুরুত্ব নেই দাবি করে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “বিজেপি কাকে প্রার্থী করেছে, তা আমাদের কাছে কোনও গুরুত্ব রাখে না। এই মুহূর্তে জেলায় বিজেপির সংগঠন
বলে কিছু নেই। দু’টি লোকসভা কেন্দ্রেই মানুষ এ বার তৃণমূলের পক্ষে রায় দেবেন।”