কাকলি ঘোষ দস্তিদার। —ফাইল চিত্র।
সপ্তম দফায়, ১ জুন বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের ভোট। তার আগে মঙ্গলবার বারাসত কেন্দ্রের অন্তর্গত হাবড়ার সভায় এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে দেগঙ্গা বিধানসভা এলাকা। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই এলাকা থেকে বরাবরই লোকসভা ভোটে তৃণমূল বড় লিড পেয়ে থাকে। কাকলি ২০১৪ সাল থেকে এক টানা বারাসতের সাংসদ। দেগঙ্গা তাঁকে প্রতি বার ভোটে দু’হাত ভরিয়ে দিয়েছে। শুভেন্দু এ দিন বলেন, ‘‘হাবড়া এবং অশোকনগর তো বিজেপির। বিধাননগরের মানুষ যাবেন আর পদ্ম ফোটাবেন। ওখান থেকে ৫০ হাজার ভোটের লিড থাকবে।’’ দেগঙ্গা তিনি ‘বুঝে নেবেন’ বলেও কর্মী-সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন শুভেন্দু।
১২ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাবড়ায় প্রশাসনিক সভা করেছিলেন। তারই পাল্টা এ দিন সভা করেন শুভেন্দু। শুভেন্দু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক স্বপন মজুমদার, সুব্রত ঠাকুর, বিজেপি নেতা কৌস্তব বাগচী, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র সহ অনেকে।
খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের নাম না করে তাঁকে ‘ডাকাত মন্ত্রী’ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। পুকুর বুজিয়ে বাড়ি তৈরি, বেআইনি ভবন তৈরির অভিযোগ করেন রথীনের এলাকা মধ্যমগ্রামে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এর আগে গিয়েছিল রথীনের মাইকেল নগরের বাড়িতে। এ দিন সে প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন শুভেন্দু। জেলবন্দি নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ‘ডাকাতদের সর্দার’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গেই টেনে আনেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের কথা। ‘সন্দেশখালির বাঘ’ শাহজাহান এখন ‘নেংটি ইঁদুর’ হয়ে গিয়েছে বলে কটাক্ষ করেন। রেশনের গম নদিয়া-উত্তর ২৪ পরগনা হয়ে প্রায় ৮০ শতাংশি বাংলাদেশে পাচার হয়ে যেত বলে অভিযোগ শুভেন্দুর।
মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় এলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রথমেই মিথ্যাশ্রী পুরস্কার দেওয়া হবে।’’ কংগ্রেস-সিপিএমেরও সমালোচনা করেছেন তিনি।
শুভেন্দুর সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় কাকলি পরে বলেন, ‘‘দেশের আইন মেনে, সংবিধান মেনে রাজনীতির ময়দানে আসুন। শালীনতা, গণতন্ত্র বজায় থাকুক। এক জন বয়োজ্যেষ্ঠ মহিলা সম্পর্কে কী ভাষায় কথা বলতে হয়, পরবর্তী সময়ে শুভেন্দু যেন সেটা মাথায় রাখেন।’’ তাঁর বিরুদ্ধে শুভেন্দুর তোলা নানা অভিযোগ প্রসঙ্গগুলি গুরুত্ব দিতে চাননি কাকলি।
শুভেন্দু অধিকারীর সমালোচনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রয়া, ‘‘শুভেন্দুবাবুর মনে হয়েছে, তাই বলেছেন। ওঁকে এ সব বলার জন্য ধন্যবাদ।’’ রথীন আরও বলেন, ‘‘আমি তো এখন আর মধ্যমগ্রামের পুরপ্রধান নেই। তবে উনি যে মধ্যমগ্রাম সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন, সে জন্যও ধন্যবাদ!"