মিঠুন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিবাড়ির লড়াই মানে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট। তবে বাঙালির কাছে এটা ১৪৩১ বঙ্গাব্দেরও ভোট। কারণ, বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ জুড়েই চলবে ভোটপর্ব। শুরুতেই উত্তরবঙ্গের তিন আসন কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ভোটগ্রহণ আগামী ১৯ এপ্রিল। আর নতুন বাংলা বছরের সেই ভোটে পয়লা বৈশাখে প্রচারে নামছেন মিঠুন চক্রবর্তী। পয়লায় রবিবার আলিপুরদুয়ার, দোসরায় সোমবার জলপাইগুড়ি এবং তেসরায় মঙ্গলবার কোচবিহারে প্রচারে যাবেন তিনি। প্রতি দিনই একটি করে রোড-শো এবং একটি করে সভা করবেন তিনি।
২০২১ সালে নীলবাড়ির লড়াই জমে ওঠার মধ্যেই অভিনেতা তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মিঠুন যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। ব্রিগেড ময়দানে মোদীর সভামঞ্চে ধুতি-পাঞ্জাবির সঙ্গে কালো টুপি আর কালো চশমায় শোভিত মিঠুনকে দেখা গিয়েছিল। সে দিনই তিনি তাঁর অভিনীত সিনেমার জনপ্রিয় সংলাপ উপস্থাপিত করেছিলেন রাজনৈতিক মঞ্চে। ‘মহাগুরু’ নামেও খ্যাত মিঠুন বলেছিলেন, ‘‘আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি একটা কোবরা। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।’’
এর পরে রাজ্য বিজেপি হেলিকপ্টারে মিঠুনকে রাজ্যের এ মাথা থেকে ও মাথা নিয়ে গিয়েছিল। আর সর্বত্রই সিনেমার ডায়লগ আর রাজনীতির স্লোগান মিলিয়ে নিজেকে ‘জাত গোখরো’ বলে দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি। এ বার কিন্তু এটাই হবে। দাদার প্রতি ভরসা রাখবেন। আমার কথায় বিশ্বাস রাখবেন। দাদা কোনও দিন মুখ ফিরিয়ে পালিয়ে যায়নি। আমি সব সময় পাশে থাকব।’’ কোথাও আবার ‘ফাটাকেষ্ট’ ছবির সংলাপ শুনিয়েছিলেন, ‘‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে।’’ গোটা রাজ্যে ‘জাত গোখরো’ হিসাবে ‘ফোঁস’ করলেও শাসক তৃণমূলকে ‘ছবি’ বানাতে পারেননি। এর পরে রাজনীতি থেকে কিছু দিন দূরেই ছিলেন। তবে পরে আবার তিনি সক্রিয় হন। বিজেপির সাংগঠনিক কর্মসূচিতেও দেখা যায় রাজ্যের কোর কমিটির সদস্য মিঠুনকে।
এ বার মিঠুনকে বাংলা এবং ত্রিপুরার তারকা প্রচারকের তালিকায় বিজেপি রাখলেও চিন্তা ছিল মিঠুনের স্বাস্থ্য নিয়ে। কারণ, গত ফেব্রুয়ারি মাসেই কলকাতায় ছবির কাজে এসে শুটিং ফ্লোরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কয়েকটা দিন হাসপাতালেও থাকতে হয়। হাসপাতালে থাকাকালীন রাজ্য বিজেপি নেতারা দেখতে তো যানই, তাঁকে ফোন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার দিন বলেছিলেন, দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে পুরোপুরি থাকবেন তিনি। এর পরে শুটিংয়েও যোগ দেন। এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও ডায়াবেটিক মিঠুনের বয়সও এখন ৭৩। এর উপরে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের গরম। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে ঠাসা কর্মসূচি দেওয়া মিঠুন এক বার অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন। এ বার তাই প্রাথমিক ভাবে কম চাপের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। প্রতি দিন একটি করে রোড-শো এবং একটি সভা। যা ঠিক হয়েছে তাতে রবিবার তিনি আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁওতে রোড-শো করবেন। পরে সভা জটেশ্বরে। পরের দিন জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে রোড-শো এবং জলপাইগুড়ি শহরে সভা। এই দফার শেষ দিন মঙ্গলবার তিনি কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে রোড-শো করবেন। বিকেলে সভা ঘোকসাডাঙায়। দ্বিতীয় দফার ভোটে ২০ তারিখ বালুরঘাটে যাওয়ার কথা মিঠুনের।