শান্তিকুঞ্জে অগ্নিমিত্রা পালকে স্বাগত জানাচ্ছেন দিব্যেন্দু অধিকারী। ছবি: শুভেন্দু কামিলা।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষের বদলে বিজেপি প্রার্থী করেছে অগ্নিমিত্রা পালকে। রবিবারই তাঁর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সোমবার ‘শান্তিকুঞ্জে’ (বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাঁথির বাড়ি) পা রাখলেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী। অধিকারী বাড়ির অভিভাবক তথা বর্ষীয়ান বিদায়ী সাংসদ শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন অগ্নিমিত্রা। তৃণমূলের কটাক্ষ, বিজেপি প্রার্থিপদে কার প্রভাব রয়েছে এই ঘটনাতেই স্পষ্ট। যদিও অগ্নিমিত্রার দাবি, দলে কোনও
দ্বন্দ্ব নেই।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে শুধুমাত্র এগরা পূর্ব মেদিনীপুরে। বাকি ছ’টিই পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাই প্রার্থী হওয়ার পরেই অগ্নিমিত্রার পশ্চিম মেদিনীপুরের পরিবর্তে শান্তিকুঞ্জে যাওয়াকে বিজেপির অন্দরের দ্বন্দ্ব হিসেবেই দেখছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলছেন,‘‘যাঁরা দিলীপদাকে ষড়যন্ত্র করে মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে দিয়েছেন সোমবার তাঁরাই পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মেদিনীপুরে যারা বিজেপির পুরনো কর্মী তারা এ বার ঢেলে তৃণমূলকেই সমর্থন করবেন।’’ যদিও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শাসকদলের দাবি খারিজ করে দিয়ে মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা দাবি করেন, ‘‘জানি তৃণমূল এটা প্রচার করার চেষ্টা করছে। তবে আমি দিলীপদার যতটা অগ্নিমিত্রা, ততটাই শুভেন্দুদা এবং সুকান্তদার অগ্নিমিত্রা।’’ দিলীপ প্রসঙ্গে অগ্নিমিত্রার মন্তব্য, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে দিলীপদা মেদিনীপুরের সংগঠনটাকে ভাল ভাবে সাজিয়েছেন। মন খারাপ হতেই পারে। কিন্তু আমরা একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ পার্টির সদস্য। আমাদের যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলবে সেখানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। তৃণমূল আমাদের কথা না ভেবে নিজেদের নিয়ে চিন্তা করুক।’’
এ দিন দোল উৎসবের বিকেলে কাঁথি যান অগ্নিমিত্রা। প্রথমে তিনি বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে যান। সেখানে মহিলা মোর্চার কর্মীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপকুমার দাস। পরে জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অগ্নিমিত্রা। এরপর হেঁটে পৌঁছন শান্তিকুঞ্জে। অগ্নিমিত্রাকে স্বাগত জানাতে বাড়ির মূল দরজায় অপেক্ষা করছিলেন তমলুকের বিদায়ী সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। এর পর অগ্নিমিত্রা সোজা শান্তিকুঞ্জের ভিতরে চলে যান। সেখানে প্রার্থী হিসেবে মেদিনীপুরের মাটিতে পা রাখার আগে প্রবীণ শিশিরের আশীর্বাদ নেন অগ্নিমিত্রা। সাংগঠনিক বিষয় নিয়েও পারস্পরিক আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
এ দিন তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের শান্তিপুর এলাকার বারাসতি গ্রামে দোল উৎসব উপলক্ষে রথযাত্রার উদ্বোধনে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি জানান, এ বার ভোটে দু’টি প্রধান বিষয় চাকরি দুর্নীতি, বেকারদের চাকরি লুট এবং সন্দেশখালির আন্দোলন। দু’টি ক্ষেত্রেই যাঁদের প্রধান অবদান তাঁদের প্রার্থী করেছে বিজেপি।