Lok Sabha Election 2024

মিলবে ‘লিড’, প্রত্যয়ের সুর বিজেপির

লোকসভা ভোটে বিধানসভাভিত্তিক কোন দলের কী অবস্থা? প্রচারে কারা কোন বিষয়কে তুলে ধরছে? আজ, তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্র।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ০৭:৪৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ভোটের দিন এগিয়ে আসছে। কিন্তু তারকেশ্বরে গেরুয়া শিবিরের প্রচার এখনও তেমন জমল না বলে দাবি করছেন বহু সাধারণ মানুষ।

Advertisement

হল কী?

আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের চারটি বিধানসভা আসন বিজেপির দখলে রয়েছে। কিন্তু এই লোকসভা কেন্দ্রেরই অধীন তারকেশ্বরে দলের তরফে ভোট প্রচারে এখনও সে ভাবে জোর আসেনি বলে দলের প্রবীণ নেতারা ঠারেঠোরে মানছেন। তাঁদের খেদ, নবীন প্রজন্মের যে সব নেতা এ বারে দলের তরফে ভোটের দায়িত্বে আছেন, তাঁরা প্রবীণদের গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। পুরনো নেতারা নামতে গেলে তাঁদের আগ বাড়িয়ে বলা হচ্ছে, প্রচণ্ড গরমে এই বয়সে ঝুঁকি নেবেন না। বিশ্রাম নিন। তাই অনেকেই উৎসাহ দেখাচ্ছেন না।

Advertisement

যদিও বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার এক নেতা বলেন, সব দলেই নবীন আর প্রবীণ প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে কিছু মান-অভিমান থাকেই। ভোটের এখনও কিছু দিন বাকি আছে। সবাই মিলেমিশে তারকেশ্বরে জোরদার প্রচারে নামবেন।’’ গত বিধানসভা ভোটে হারলেও বিজেপি নেতৃত্বের প্রত্যয়, তারকেশ্বর বিধানসভায় এ বার অবধারিত ভাবে ‘লিড’ পাবেন তাঁরা।

গেরুয়া শিবিরের তরফে প্রচারে তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’কেই বেশি করে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ এ সব বিশ্বাস করছেন না বলে দাবি শাসক শিবিরের। তাদের দাবি, স্রেফ ‘উন্নয়ন’-এর জোরেই তারা এখানে ভোট বৈতরণী পেরিয়ে যাবে। এমনকি, উন্নয়নের খতিয়ান দিতে গিয়ে তারা বাম আমলের প্রসঙ্গও টেনে আনছে।

ভোট কারবারিরা যা-ই বলুন, ভোট নিয়ে শৈব্যতীর্থ যেন খানিক উদাসীন! সাধারণ মানুষ থেকে ভোটের কাজে যুক্ত সকলেই মানছেন, উদ্ভট গরম এ বার ভোট পার্বণকে অনেকটাই পানসে করে দিয়েছে। তার মধ্যেই মানুষের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সব দল।

তারকেশ্বর ব্লকের দশটি এবং ধনেখালির পাঁচটি পঞ্চায়েত এই বিধানসভায় পড়ে। রয়েছে তারকেশ্বর পুরসভাও। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূলের অপরূপা পোদ্দার তারকেশ্বর বিধানসভায় ৪৩৪৩ ভোটে বিজেপির থেকে এগিয়েছিলেন। ’২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের রামেন্দু সিংহরায় ৭৪৮৪ ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে বিধায়ক হন।

ওই দুই পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, বিজেপি এখানে সংগঠন মজবুত ও প্রচার জোরদার করতে পারলে তৃণমূলের এখানে এগিয়ে থাকা সহজ হবে না।

এ বারেও এগিয়ে থাকার ব্যাপারে কেন তাঁরা প্রত্যয়ী? শাসকদলের যুবনেতা চন্দন সরকারের বক্তব্য, তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ (টিডিএ), সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল এবং পঞ্চায়েত সমিতির টাকায় এই বিধানসভা এলাকায় অন্তত ৬৪টি পিচ ও ঢালাই রাস্তা হয়েছে। বৈদ্যপুর চৌমাথা থেকে চাউলপট্টি পর্যন্ত চার কিলোমিটার রাস্তা নতুন ভাবে তৈরির অনুমোদন মিলেছে। ছয’কোটি টাকা ব্যয়ে ওই কাজ হবে ভোটের পরেই। তারকেশ্বর হাসপাতালে আধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরি হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকায়। টিডিএ তারকেশ্বর পুরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে নিকাশি নালার কাজ করছে। দুধপুকুরের জল শোধনে স্বর্ণমন্দিরের ধাঁচে উন্নত প্রযুক্তিতে কাজ চলছে।

তারকেশ্বরের প্রবীণ সিপিএম নেতা স্নেহাশিস রায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘ওরা কিছুই করেনি। সব ভাঁওতা।’’ কেন? স্নেহাশিসের দাবি, ‘‘বাম আমলে আমরা আধুনিক দু’টো বাস স্ট্যান্ড করেছিলাম। ওরা বাস স্ট্যান্ড সম্প্রসারণের জায়গায় আবাসন এবং দোকানঘর তুলে নষ্ট করেছে। দুধপুকুরে আমাদের আমলে তৈরি প্লান্ট ওরা অকেজো করে ফেলে রেখেছে। রবীন্দ্রভবন হয়নি। হাসপাতালের উন্নয়ন আমাদের আমলেই শেষ হয়েছে।’’ সিপিএম নেতার কথায় সায় দেন পোড়খাওয়া কংগ্রেস নেতা তথা দলের শহর সভাপতি শৈল্য ঘোষ।

পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর অবশ্য দাবি, শহরে প্রেক্ষাগৃহের জমি কেনা হয়েছে। বাস স্ট্যান্ড সম্প্রসারণের জায়গা তৈরি। সুইমিং পুল যথারীতি চলছে। তবে, বিজেপি নেতা গণেশ চক্রবর্তী মনে করছেন, উন্নয়নের কথায় আর চিঁড়ে ভিজবে না শাসকদলের। তৃণমূলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ‘দুর্নীতি’ খুল্লমখুল্লা হয়ে গিয়েছে। লাগামছাড়া দুর্নীতিই ওদের সর্বনাশ ডেকে আনছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement