বাংলার দ্বিতীয় দফার প্রার্থিতালিকায় বড় চমক বিজেপির। বসিরহাট আসনে তারা টিকিট দিল সন্দেশখালির গৃহবধূ রেখা পাত্রকে। —ফাইল ছবি।
বাংলার দ্বিতীয় দফার প্রার্থিতালিকায় বড় চমক বিজেপির। বসিরহাট আসনে তারা টিকিট দিল সন্দেশখালির গৃহবধূকে। ওই আসনে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন রেখা পাত্র। সন্দেশখালিতে নারী নিগ্রহ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। তাঁর সেই অভিযোগ রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই এলাকায় শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেও নামেন রেখা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রথম শিবু হাজরার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র এবং পরে ভারতী ঘোষের নাম চর্চায় ছিল। কিন্তু একবারে শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত হল রেখার নামই। বিজেপি সূত্রে খবর, বসিরহাট আসনের প্রার্থী বাছাইয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। অনেক অঙ্ক কষেই মোদী রেখাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ৬ মার্চ বারাসতে সভা করতে এসে মোদী সন্দেশখালির কয়েক জন ‘নির্যাতিতা’ মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেও নাকি ছিলেন রেখা। প্রধানমন্ত্রীকে সন্দেশখালির ঘটনার বিবরণ দেন মহিলারা। সেই সময় ওই মহিলাদের কথা মন দিয়ে শোনেন প্রধানমন্ত্রী। বসিরহাট আসনের জন্য তখনই রেখার কথা ভেবে রাখেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ঘুণাক্ষরেও কাউকে টের পেতে দেওয়া হয়নি। এ বার ঘোষণা হল। যা শুনে, পদ্ম-শিবিরের অনেকেও অবাক।
রেখাকে প্রার্থী করার পিছনে পদ্মশিবিরের অঙ্ক রয়েছে। বিজেপি চাইছে, তাঁকে সামনে রেখে গোটা রাজ্যে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগকে আরও তীব্র করা যাবে। বিজেপির ধারণা, শুধু বসিরহাটেই নয়, গোটা রাজ্যের ভোটে তার সুফল মিলবে। বসিরহাটে এমনিতেই বিজেপির সংগঠন মজবুত নয়। তবে রেখা প্রার্থী হওয়ায় লড়াই সহজ হবে বলেও মনে করছেন দলের রাজ্য নেতারা। এ নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এই প্রার্থী বাছাই বলে দিল, তৃণমূল শাহজানদের দল আর বিজেপি নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের দল।’’
মহিলাদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নিয়ে গত জানুয়ারি মাস থেকে সরগরম হয় সন্দেশখালি। তৃণমূলের তৎকালীন স্থানীয় নেতা শেখ শাহজাহান ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে মহিলাদের শ্লীলতাহানি, জোর করে নাবালিকার বিয়ে, জমি হাতানোর মতো অভিযোগ ওঠে। ভোটের আগে নারী নিগ্রহ এবং জুলুমের অভিযোগকে হাতিয়ার করে লড়াইয়ে বাড়তি অক্সিজেন পায় বিজেপি। এ বার রেখাকে প্রার্থী করে তারা মহিলাদের প্রতি সুবিচারের পক্ষে বার্তা দেওয়ার কথা বলবে।
বসিরহাট আসনে তৃণমূল প্রার্থী করেছে হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলামকে। ওই আসনে বাম ও কংগ্রেসের সমর্থনে আইএসএফের প্রার্থী হয়েছেন মহম্মদ শহিদুল ইসলাম মোল্লা। এখন বিজেপির রেখা প্রার্থী হওয়ায় ওই আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হল।