—প্রতীকী ছবি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিএএ) সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করলেন হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সিএএ কার্যকর হওয়ার আগেই ২০১৫-য় তৃণমূল পরিচালিত হাওড়া পুরসভা এলাকার নাগরিকদের তথ্যপঞ্জি তৈরি করেছিল। আর সেটা হয়েছিল বর্তমানে হাওড়ার বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী তৃণমূলের মেয়র থাকাকালীন। এই আবহে দুই দলের পার্থক্য কোথায়, সেই প্রশ্ন তুলছেন সব্যসাচী। তৃণমূল এই বিষয়ে খোঁজখবর করার কথা জানিয়েছে। উল্টো দিকে, রথীন কেন্দ্রের প্রকল্প রূপায়ণের মধ্যে রাজনীতি দেখেননি।
সব্যসাচী শনিবার একটি নথি দেখিয়ে দাবি করেছেন, “সিএএ-র জন্য ২০১৫-তেই হাওড়ায় ‘ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার’-এর (এনপিআর) প্রাথমিক কাজ সেরে ফেলেছিল তৃণমূল। পুরসভার এই চিঠিতেই লেখা, নাগরিকত্বের রেজিস্ট্রেশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য নাগরিকদের তথ্যপঞ্জি তৈরি করতে হবে। তাই জনগণনার কাজ করবেন, এমন ব্যক্তি নিয়োগ করতে হবে।” তাঁর সংযোজন, “এই চিঠি থেকে পরিষ্কার, বিজেপির কর্মসূচি তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা হাওড়ায় ২০১৫-তেই কার্যকর করেছিল।” তৃণমূল ‘ক্যা ক্যা ছি ছি’-র মতো কথা বলে সিএএ-র মতো বিষয়কে আদতে ‘খেলো’ করছে এবং এই নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন সিপিএম প্রার্থী।
যদিও বিজেপি প্রার্থী রথীনের ‘যুক্তি’, “কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রকল্প মানুষের জন্য করা রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিত হতে পারে না। হাওড়া পুরসভার সংযুক্ত এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির কোনও নম্বর ছিল না। তাই এলাকার বাসিন্দাদের তথ্যপঞ্জি জোগাড় করা হয়েছিল।” তাঁর পাল্টা তোপ, “মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতে ও নিজেদের অপদার্থতাকে ঢাকতে সিপিএম অলীক মন্তব্য করছে।” তবে সিপিএম প্রার্থীর দাবি কার্যত উড়িয়ে দিচ্ছেন না হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা সুজয় চক্রবর্তী! তবে ২০১৫-য় কী ঘটেছিল, তা খতিয়ে দেখতে হবে জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, “অনেকেই যে তলায়-তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অনেক কিছু করেছেন, সেটা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে। বিচারপতি হয়েও বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। হাওড়াতেও এমন কিছু হয়ে থাকতে পারে! দলীয় স্তরে খোঁজ নিচ্ছি।”
লোকসভা ভোটের মুখে নারীর আত্মরক্ষা, আত্মমর্যাদার প্রশ্নকে সামনে রেখে সাংসদ তহবিলের এক তৃতীয়াংশ (৩৩%) অর্থ খরচ করার কথা বলেছে সিপিএম। সব্যসাচীর অভিযোগ, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে হাওড়া ময়দান মেট্রোর কাছে তাঁরা হোর্ডিং দিলেও, সংশ্লিষ্ট একটি এজেন্সিকে ভয় দেখিয়ে তা খুলতে বাধ্য করেছে তৃণমূল। এ দিকে, হাওড়ার বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর বোজানো সংক্রান্ত তথ্যও সামনে আনবেন বলে দাবি করেছেন সিপিএম প্রার্থী।