লকেট চট্টোপাধ্যায় (বাঁ দিকে)। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
জনপ্রতিনিধি হওয়ার লক্ষ্য নেই। লোকসভা ভোটের টিকিট পেয়েছেন, প্রার্থী হয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ভোটপ্রচারে বেরিয়ে হুগলির তৃণমূল প্রার্থীকে এ ভাবেই নিশানা করলেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। রবিবার প্রচারে বেরিয়ে মহিলা ভোটারদের উদ্দেশে রচনা বলেছিলেন, ভোটে জিতলেই ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রিয়্যালিটি শো’তে ডাকবেন হুগলির মহিলা ভোটারদের। তৃণমূলের তারকা প্রার্থীর কথায়, ‘‘ভোটে জিতে প্রথম বড় সিদ্ধান্ত ওটাই।’’ মঙ্গলবার লকেটের কটাক্ষ, ‘‘মানুষের সেবার জন্য আসেননি উনি। টিকিট পেয়েছেন। তাই এসেছেন। হেরে যাবেন। তখন আবার ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ চলবে। সেখান থেকে কয়েক দিনের জন্য ছুটি নিয়ে এসেছেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের দাবি, রচনা রাজনীতি থেকে রোজগার করার তাগিদে আসেননি। ভোটের পরেও হুগলি লোকসভার বাসিন্দারা তাঁকে দেখতে পাবেন।
প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো সিমলাগড় কালীমন্দিরে পুজো দিয়ে মঙ্গলবার প্রচার সারেন হুগলি লোকসভার বিজেপি প্রার্থী লকেট। তার পর সিমলাগড়ের চাঁপাহাটি এলাকায় রাধাকৃষ্ণ মন্দিরেও পুজো দেন। প্রচারে বেরিয়ে অভিনয় জগতের সতীর্থ রচনা সম্বন্ধে লকেট বলেন, ‘‘রাজনীতিতে আসতে গেলে ত্যাগ করতে হয়। আমি ১০ বছর সব কিছু ত্যাগ করে এসেছি।’’ রচনাকে তাঁর ‘পরামর্শ’, ‘‘টিকিট না-পেয়ে শুধু মানুষের জন্য সেবা করুক এসে। ত্যাগ করেই আমি এসেছি।’’
প্রচারে বেরিয়ে যে বিজেপি কর্মীর বাড়িতে চা পান করেন লকেট, তাঁর নাম শুকদেব মণ্ডল। তাঁর মাটির বাড়িতে বসে লকেট বলেন, ‘‘বিজেপি কর্মী বলে আবাস যোজনায় উনি বাড়ি পাননি। আর তৃণমূল নেতাদের বড় বড় বাড়ি হয়েছে।’’
তাঁদের দলীয় প্রার্থীকে নিশানা করে লকেটের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হুগলি জেলা তৃণমূলের সম্পাদক অসিত চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতি থেকে আয়ের চিন্তাভাবনা নেই। নিজের পেশাকে উনি সম্মান করেন। আমরাও চাই না কেউ তাঁর পেশা জলাঞ্জলি দিয়ে রাজনীতি করে বেড়াক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই চুঁচুড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। সেখানেই দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মিটিংয়ে বসছেন। নির্বাচন মিটে গেলেও তিনি সেখানে থাকবেন।’’ একই সঙ্গে আবাস যোজনা নিয়ে লকেটের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আগে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ভেবে দেখা উচিত ১৩ লক্ষ বাড়ির অনুমোদন দেওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার কেন টাকা আটকে রাখল? টাকা আটকে রাখার জন্য গরিব পরিবারগুলো বঞ্চিত হয়েছে। আজ যাঁরা মাটির বা টিনের বাড়িতে আছেন, বিজেপি নেতাদেরই দেখা উচিত কেন তাঁরা ঘর পেলেন না।’’