ঘাটালের সভায় বিজেপি প্রার্থী হিরণের সঙ্গে অমিত শাহ। — নিজস্ব চিত্র।
ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভা করতে এসে তাঁর সেক্রেটারির বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশি অভিযান নিয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, এ ভাবে বিরোধী দলনেতা, প্রার্থী বা সচিবদের বাড়িতে পুলিশি অভিযান চালিয়ে বিজেপিকে ভয় পাওয়ানো যাবে না। এ ব্যাপারে শাহ সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কোলাঘাটের ভাড়াবাড়িতে যায় পুলিশ। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক ডামাডোল শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে সূত্রের খবর, শুধু শুভেন্দুর ভাড়াবাড়িই নয়, পুলিশি অভিযান চলেছে মেদিনীপুরের আরও কয়েক জন বিজেপি নেতার বাড়িতে। তার মধ্যে রয়েছেন ঘাটালের প্রার্থী হিরণের আপ্তসহায়ক তমোঘ্ন দে-র বাড়িও। হিরণের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে খড়্গপুরের তালবাগিচা এলাকায় তমোঘ্নের বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। খড়্গপুর লোকাল থানার পাশাপাশি ছিল ঘাটাল থানার পুলিশও। এরই পাশাপাশি, বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক সৌমেন মিশ্রের বাড়ি এবং মেদিনীপুরে বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষের বাড়িতেও পুলিশি অভিযান চলে। কিন্তু কী কারণে গভীর রাতে বিজেপি নেতাদের বাড়িতে গেল পুলিশ, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি। গভীর রাতে তমোঘ্নের বাড়ির সামনে যখন হাজির পুলিশ, তখন সেখানে পৌঁছন হিরণও। তিনি পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সেই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে ‘লাইভ সম্প্রচার’ করেন হিরণ। সেখানেই পুলিশকে দাবি করতে শোনা যায়, প্রতারণার অভিযোগের তদন্ত করতে তাঁরা এসেছেন। যদিও পরবর্তী কালে পুলিশের তরফে এই মন্তব্য নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
গভীর রাতে বাড়িতে পুলিশ দেখে ঘাবড়ে যান বিজেপি নেতাদের পরিবারের লোকজন। তন্ময়ের স্ত্রী রিনা ঘোষ বলেন, ‘‘চোখটা লেগেছে একটু, তখনই দরজায় আওয়াজ পাই। জানালা দিয়ে দেখি বিশাল পুলিশবাহিনী। রাত তখন দেড়টা। দেড়টা থেকে প্রায় চারটে পর্যন্ত। মহিলা অফিসারের সঙ্গে কথা বলি। আমি বলি, বাড়িতে কোনও পুরুষ নেই, দরজা কী করে খুলব? কী ব্যাপারে এসেছিল কিছুই বলেননি।’’
বিজেপি নেতা সৌমেন বলেন, ‘‘গতকাল রাত তিনটে নাগাদ পুলিশের পোশাক পরে অনেক লোক আসেন। বাড়ি ঘিরে নিয়ে আমার খোঁজ করতে থাকে। আমি বাড়িতে ছিলাম না। জানি না, কী অপরাধ আমার। আমার অনুমান, আনন্দপুর থানার পুলিশ এসেছিল।’’
বিজেপি নেতাদের বাড়িতে পুলিশি অভিযান নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘আমি আজ মমতাজিকে বলতে এসেছি যে, আমাদের কার্যকর্তাদের বাড়িতে মমতা দিদি আপনি রেড করাচ্ছেন। কিছুই মিলবে না। আপনার মন্ত্রীর বাড়িতে রেড হল, ৫০ কোটি টাকা পাওয়া গেল। আমাদের শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে রেড করলেন, ২৫ পয়সাও পাওয়া গেল না! মমতা দিদি, আপনি যদি মনে করেন, আমাদের জেলা সভাপতি, বিরোধী দলনেতা, প্রার্থীদের সাথীদের বাড়িতে রেড করে আপনি আমাদের ভয় পাইয়ে দেবেন, তা হলে বলব, আপনি ভুল করছেন। যত সন্ত্রাস করবেন, পদ্ম ততই মজবুত হয়ে ফুটে উঠবে।’’