বীরভূম যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জুড়ে রয়েছে প্রচার। দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একের পর এক মিছিল, নির্বাচনী জনসভা। সেখানে হাজির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রী থেকে তারকা প্রচারক। লোকসভা নির্বাচনের মুখে জনসভা কিংবা র্যালি জেলার কোন কোন মাঠে করবে রাজনৈতিক দলগুলি, তার খসড়া তালিকা তৈরি করে ফেলেছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। শুধু জনসভা কিংবা প্রচার সভাই নয়, মন্ত্রী ও তারকা প্রচারকদের হেলিকপ্টার নামতে পারে, তেমন মাঠও চিহ্নিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজনৈতির দলের মিটিং, মিছিল ও র্যালি করার জন্য এখনও পর্যন্ত ২৩৪টি মাঠ চিহ্নিত হয়েছে। হেলিকপ্টার নামার জন্য চিহ্নিত হয়েছে ৪৭টি মাঠ। তবে, প্রয়োজন অনুযায়ী এই সংখ্যা বেশিকম হতে পারে। এখনও এটা চূড়ান্ত নয়।
লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত না-হলেও রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি প্রশাসনের প্রস্তুতিও চলছে পুরোদমে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পর্ব পার করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) সঙ্গে থাকা ভিভি প্যাট (ভোটার-ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল) পরীক্ষা করে দেখা, ভোটারদের সচেতন করা, ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা মাস্টার ট্রেনারদের প্রশিক্ষণ, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে হচ্ছে সর্বদলীয় বৈঠক কিংবা কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় থাকবে, তার স্থান নির্বাচন। সেই তালিকায় জুড়েছে রাজনৈতিক দলের ভোট প্রচারের জন্য বড় সংখ্যায় মাঠ নির্বাচনও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে কোনও ব্লকের কোন কোন মাঠ রাজনৈতির দলের প্রচারসভা, জনসভা ও অন্য কর্মসূচির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, সে বিষয়ে জেলার সব ব্লকের বিডিওদের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই জনসভার মাঠ ও হেলিপ্যাড কোথায় করা যায়, তা চিহ্নিত হয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট মাঠে সেই প্রচারের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে, একই ব্লকে শাসক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের একাধিক সভা বা কর্মসূচি থাকলে, তখনই সমস্যার তৈরি হয়। পছন্দমাফিক জায়গা না-পাওয়ার অভিযোগ ওঠে বিরোধী শিবিরের তরফে। যাতে তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না-হয়, তার জন্যই প্রচুর সংখ্যায় মাঠ নির্বাচনের প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি।
জেলার বাম এবং বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বে প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে প্রচারে সমান সুযোগ দিতে হবে। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসন মাঠ বা হেলিপ্যাডের তালিকা তৈরি করছে। যদিও বিরোধীদের ক্ষোভ, মাঠ এবং হেলিপ্যাড ব্যবহারের সুবিধা পায় শাসকদলই। তৃণমূলের আবার দাবি, একমাত্র তারাই সারা বছর মানুষের পাশে থাকে। বিরোধীরা কেবল নির্বাচন এলেই তৎপরতা বাড়ায়। ভোটের ফল যা হওয়ার, সেটাই হয়।