বিমল গুরুং। —ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং জেলার পাহাড় সমতলের শান্তি, সমৃদ্ধি বনাম জাতির স্বভিমান। সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। দার্জিলিং পাহাড়ে লোকসভা ভোটে প্রার্থী নয়, বিমল গুরুং বনাম অনীত থাপার প্রচার লড়াই জোরকদমে শুরু হয়েছে। রবিবারই বিজেপিকে আবার সমর্থন করেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি গুরুং। আগামী ৩ এপ্রিল ম্যাল চৌরাস্তায় জমায়েত করে রাজু বিস্তার মনোনয়নের ঘোষণা করা হয়েছে। আর তার পরেই জিটিএ-সহ প্রজাতান্ত্রিক নেতাদের কটাক্ষ করেন গুরুং। পাল্টা, শান্তির পক্ষে প্রচারে নেমে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সভাপতি অনীত জানান, পাহাড়ে আর গুরুং-জমানা ফিরবে না। গোলমালের চেষ্টা কেউ করলে, পাহাড়বাসী রুখে দেবেন।
গুরুং কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে জল প্রকল্প থেকে শিক্ষক নিয়োগ, রাস্তা, কমিউনিটি হল তৈরির মতো নানা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। নেতা-কর্মীদের তা নিয়ে দ্রুত প্রচারে নামতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি জাতিকে বাঁচানোর লড়াই করছি। এক দল জাতির মান, ভাষা বিক্রি করতে বসেছে। দুর্নীতিতে ভরেছে পাহাড়। ৬০০ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করেছে। তার হিসাব জনগণ চাইবে।’’ গুরুংয়ের পাল্টা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সভাপতি তথা ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপা বলেন, ‘‘মুখেই খালি দুর্নীতি আর দুর্নীতি। আমরা অডিটে ভয় পাই না। তদন্ত করতেই পারে, বহু বার বলেছি। তবে এ সব বলে পাহাড়কে নতুন করে অশান্ত করতে দেব না।’’
সূত্রের খবর, আলাদা রাজ্যের দাবির বদলে জাতি, দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করতে চাইছেন গুরুং। কারণ, গত ১৫ বছরে তিন দফায় তিনি বিজেপিকে আলাদা রাজ্যের দাবিতে সমর্থন করলেও, বিজেপি কোনও দাবিই পূরণ করেনি। বিজেপি সংকল্পপত্রে আবার পাহাড়ের দাবি রাখবে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শিলিগুড়িতে এসে পাহাড়-সমস্যা সমাধানের খুব কাছে বিজেপি পৌঁছে গিয়েছে বললেও, পাহাড়ের সর্বত্র তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। সে জায়গা থেকে পাহাড় আন্দোলনে গুলিতে নিহতদের কথা, জাতির মান এবং দুর্নীতিই গুরুং পাহাড়ে প্রচারে হাতিয়ার করতে চাইছেন। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নেতারা জানান, ২০১৭ সালে জিটিএ অডিট শুরু হতেই ভাষাকে সামনে রেখে গুরুং আন্দোলনে নামেন। পরে তা রক্তক্ষয়ী হয়। সরকারের কাছে সেই সময়ের বিভিন্ন ঘটনার মামলা এবং স্পেশাল অডিটের নথিপত্র নিশ্চয়ই রয়েছে। তাতে কারা, কী করেছিলেন, স্পষ্ট।