জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের সবচেয়ে বরিষ্ঠ ভোটারকে সম্বর্ধনা বাসন্তী ব্লক প্রশাসনের। নিজস্ব চিত্র।
শতবর্ষ পার করেছেন অনেক দিন আগে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি পঞ্চায়েতের ৪ নম্বর বিধানপল্লির হাজারি সর্দার জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের প্রবীণতম ভোটার। বাসন্তী ব্লক প্রশাসনের তরফে সম্প্রতি তাঁকে সম্মাননা জানানো হয়। ফুল, মিষ্টি আর কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বৃদ্ধার হাতে দিয়ে বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকার বলেন, ‘‘আপনার বয়স এখন পাঁচ কুড়ি চোদ্দ। আরও অনেক দিন সুস্থ থাকতে হবে, আর নিজের ভোটও নিজেকে দিতে হবে।’’ নিজের বয়স শুনে আঁতকে উঠে এক গাল হেসে হাজারি বললেন, “বাব্বা, এখনও বেঁচে আছি!”
বিডিও বলেন, “উনি এই লোকসভা কেন্দ্রের সব থেকে প্রবীণ ভোটার। তাই ওঁর সুস্থতা কামনা করে গণতন্ত্রের সব থেকে বড় উৎসবে যাতে আবারও যোগ দিতে পারেন, সেই শুভেচ্ছা জানিয়েছি।” তিন মেয়ে ও এক ছেলে হাজারির। সকলের বিয়ে হয়েছে, তাঁদেরও সন্তান-সন্ততি, নাতি-নাতনি আছে। বর্তমানে মেজো মেয়ে সুরধ্বনি মণ্ডলের বাড়িতে থাকেন বৃদ্ধা। বাকি দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে ভিন্ জেলায়। একমাত্র ছেলে থাকেন রায়নগরে। পরিবারের লোকেরা জানান, বাড়ির মধ্যে সামান্য হাঁটাচলা করলেও বয়সের ভারে দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি সবই ক্ষীণ হয়েছে হাজারির। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকে আর বুথে গিয়ে ভোট দেননি। নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বাড়িতে এসেই তাঁর ভোট নিয়ে গিয়েছেন ভোটকর্মীরা। তার আগে অবশ্য গাড়িতে করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হত তাঁকে। হাজারির নাতি নারায়ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘তেমন কোনও অসুখ বা রোগ নেই দিদিমার। শুধুমাত্র বয়সের ভারে বেশি হাঁটাচলা করতে পারেন না। তবে বাড়ির মধ্যে দিব্যি হেঁটে বেড়ান। আমাদের পুরনো দিনের অনেক গল্পও বলেন।”
হাজারি এখনও গল্প করতে ভালবাসেন। প্রাণ খুলে কথা বলেন। নির্বাচন নিয়ে বৃদ্ধার উপলব্ধি, ‘‘আগে ভোট নিয়ে এত উৎপাত ছিল না। পঞ্চায়েত ভোট এলে শুধু বোঝা যেত ভোট এসেছে। এই সব দিল্লির ভোট নিয়ে এত মাথাব্যথাই ছিল না তখন। ভোটের সময়ে এত অশান্তিও হত না।”