দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। — নিজস্ব চিত্র।
‘‘যে বুথ বেশি লিড দেবে, নির্বাচনের পরে সেই বুথ সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে বেশি বরাদ্দ পাবে।’’ দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে এমন বার্তা দিয়ে বিতর্কে বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। এই মন্তব্যকে ‘প্রলোভন’ বলে দাবি করে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল।
বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সোমবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের পুয়াবাগান মোড়ে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সুভাষ কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘প্রতিটি বুথে আরও বেশি করে লিড দেওয়ার চেষ্টা করুন। যে সমস্ত বুথে বেশি করে লিড হবে সেখানে নিশ্চিত ভাবে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের পর আমি বেশি করে এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ অনুমোদন করব।’’ নিজের সেই বক্তব্যের নেপথ্যে সুভাষের যুক্তি, ‘‘গোটা এলাকাতেই প্রয়োজন অনুযায়ী সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হবে। তার পাশাপাশি যে বুথ বেশি লিড দেবে সেই বুথ ‘ইনসেনটিভ’ হিসাবে সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ পাবে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই বুথে বেশি কাজ হবে।’’
এখানেই আপত্তি তুলেছে তৃণমূল। ভোট ঘোষণার পর সুভাষের এই মন্তব্য আসলে ভোটারদের ‘প্রলোভন’ দেখানো বলে দাবি রাজ্যের শাসকদলের। বাঁকুড়া লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সুভাষ সরকার গত পাঁচ বছরে এলাকা উন্নয়ন তহবিলের যে ২৫ কোটি টাকা পেয়েছেন, তা-ই খরচ করতে পারেননি। বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা তা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। এখন ভোটের মুখে এ সব কথা বলে প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করছেন প্রার্থী। এই ধরনের মন্তব্য করা আদর্শ আচরণ বিধির বিরোধী। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব।’’
প্রসঙ্গত, গত সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় গিয়ে ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির আহ্বায়ক পার্থ ভৌমিক বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েত বা পুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা নিজেদের এলাকায় যে ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে সেই সব এলাকায় জয়ের ব্যবধান কমে গেলে দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’’ সেই সময় পার্থের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। এ বার কার্যত একই ধরনের অভিযোগে বিদ্ধ বাঁকুড়ায় বিজেপির প্রার্থী। তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনে নালিশ জানাবে তৃণমূল।