মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — নিজস্ব চিত্র।
দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের এখনও আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চলছে। আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল নিজেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে এক টেবলে বসে জানিয়েছেন, পঞ্জাবে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি যৌথ ভাবেই আসন সমঝোতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে দিল্লিতে আসন সমঝোতা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। কেজরীওয়ালের বক্তব্য, দিল্লিতে কংগ্রেস-আম আদমি পার্টির আসন সমঝোতা না হলে বিজেপির সুবিধে হয়ে যাবে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত যে কথাবার্তা হয়েছে তাতে দিল্লির সাতটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে চারটিতে আম আদমি পার্টি লড়বে। তিনটিতে লড়বে কংগ্রেস। চণ্ডীগড় লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থীকে আম আদমি পার্টি সমর্থন করবে। সম্প্রতি চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে কংগ্রেস আম আদমি পার্টিকে সমর্থন করেছিল।
বিরোধীদের দাবি, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দলের নেতাদের ইডি-র মাধ্যমে চাপ দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ানো হচ্ছে। দিল্লির আবগারি দুর্নীতির তদন্তে ইডি বারবার মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে সমন পাঠাচ্ছে। কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘সবাই বিজেপিতে কেন যাচ্ছে জানেন? ইডি বন্ধ করে দিন। আর আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইন বা পিএমএলএ তুলে দিন। বিজেপির অর্ধেক নেতা বিজেপি ছেড়ে চলে যাবেন। বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া ও শিবরাজ সিংহ চৌহান নিজের দল তৈরি করে ফেলবেন।’’ কেজরীওয়ালের বক্তব্য, আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনের ৪৫ নম্বর ধারার জোরেই সকলের উপরে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। এই ধারায় বলা হয়েছে কোনও অভিযুক্তকে জামিন পেতে হলে অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হবে তাঁকে দোষী মনে করার কারণ নেই। জামিন পেলে ফের অপরাধ করবেন না বলেও নিশ্চয়তা দিতে হবে।
কিছু দিন আগেই পঞ্জাবের আম আদমি পার্টির সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, পঞ্জাবের ১৩টি আসনে আপের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হচ্ছে না। তার পরে আপ ঘোষণা করে, দিল্লিতে তাঁরা কংগ্রেসকে স্রেফ একটি আসন ছাড়তে পারেন। যদিও কংগ্রেস একটি আসন পাওয়ারও যোগ্য নয়। পাশাপাশি গুজরাত, গোয়াতে প্রার্থী ঘোষণা করে দেয় আম আদমি পার্টি। এর পরেই প্রশ্ন ওঠে, কেজরীওয়াল কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভাঙতে চলেছেন? এর পিছনে কি ইডি-র চাপ রয়েছে? কারণ দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডি বারবার অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে সমন পাঠাচ্ছে।
আজ দিল্লিতে কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজনের নিমন্ত্রণে কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে, মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল দু’জনেই হাজির ছিলেন। কেজরীওয়ালের সঙ্গে দিল্লির মন্ত্রী অতিশীও গিয়েছিলেন। কংগ্রেসের জাতীয় জোট কমিটির আহ্বায়ক মুকুল ওয়াসনিকও হাজির ছিলেন। সেখানেই কেজরীওয়াল বলেন, পঞ্জাবে তাঁরা একমত হয়েই জোট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ পঞ্জাবে আপ শাসক দল, কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল। তবে দিল্লি নিয়ে আলোচনা চলছে। আপ সূত্রের বক্তব্য, পঞ্জাবে বিজেপি ও অকালি দলের ফের জোট হলেও আপ, কংগ্রেস আলাদা লড়বে।