অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
আজ, ষষ্ঠ দফা ভোট চলাকালীন পাকিস্তানের এক রাজনীতিকের সমর্থন নতুন করে অস্বস্তি বাড়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। ক্ষুব্ধ অরবিন্দ কেজরীওয়াল ওই রাজনীতিককে নিজের দেশ নিয়ে মাথা ঘামানোর পরামর্শ দিলেও, পাল্টা আক্রমণে নেমে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, রাহুল গান্ধী ও অরবিন্দ কেজরীওয়ালদের সমর্থক যে প্রতিবেশী দেশে বসে রয়েছেন, তা আজ ফের স্পষ্ট হয়ে গেল।
চলতি নির্বাচনের গোড়া থেকেই ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের প্রতি পাকিস্তানের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহ দিল্লির একটি জনসভায় দাবি করেন, কেজরীওয়ালের প্রকৃত সমর্থকেরা প্রতিবেশী দেশে রয়েছেন। আজ ষষ্ঠ দফার ভোটে দিল্লির সাতটি আসনে ভোট ছিল। আজ সকালে কেজরীওয়াল পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসার পরে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘ বাবা, স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ভোট দিলাম। আমার মায়ের শরীর খুব খারাপ থাকায় আসতে পারেননি। আমি স্বৈরাচার, বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ভোট দিলাম। আপনিও ভোট দিতে অবশ্যই আসুন।’’
বিতর্কের সূত্রপাত তারপরেই। কেজরীওয়ালের ওই বক্তব্য সমর্থন করে পাকিস্তানের রাজনীতিক ইমরান সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী চৌধুরী ফওয়াদ হুসেন এক্স হ্যান্ডলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখেন, ‘‘শান্তি ও সম্প্রীতি যেন ঘৃণা ও চরমপন্থাকে হারাতে পারে।’’
রাজনীতিকদের মতে, আপাতভাবে ওই বক্তব্য নির্বিষ হলেও, যেহেতু পাকিস্তানের রাজনীতিক ওই কথা বলেছেন, অস্বস্তিতে পড়ে যান কেজরীওয়াল। ভোটের দিন এতে হিন্দু ভোটের মেরুকরণ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে ভেবে তড়িঘড়ি আসরে নামেন কেজীরওয়াল। তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘চৌধুরী সাহেব, আমি এবং আমার দেশের লোকেরা আমাদের সমস্যা সমাধানে সক্ষম। আপনার টুইটের দরকার নেই।’’
উল্টে পাকিস্তানকে পরামর্শ দিয়ে কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে পাকিস্তানের অবস্থা বেশ খারাপ। আপনি আগে নিজের দেশকে সামলান। ভারতের নির্বাচন এ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সন্ত্রাসের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক যারা, তাদের কাছ থেকে কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ সহ্য করা হবে না।’’ কেজরীওয়ালের সমালোচনার পরেও অবশ্য ফের সমাজমাধ্যমে পাকিস্তানের ওই নেতা বলেন, পাকিস্তান হোক কিংবা ভারত বা বাংলাদেশ, চরমপন্থা কোনও সীমাম্ত মানে না।’’
এই প্রথম নয়, অতীতেও একাধিকবার ভারতের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে ফওয়াদকে। গত বৃহস্পতিবারও রাহুল গান্ধীর একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে কংগ্রেসের নেতার প্রশংসা করেন ফওয়াদ। ক্ষমতায় এলে রাহুল দেশের সম্পদ বণ্টনের যে সওয়াল করেছিলেন, তা সমর্থন করেন তিনি। আজ ভোটের দিন ‘ইন্ডিয়া’র উদ্দেশে পাকিস্তানের নেতার বক্তব্যকে রাজনৈতিক ভাবে প্রচারের হাতিয়ার করে তোলে বিজেপি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেন, ‘‘আমি আগেই বলেছিলাম, কেবল রাহুল নয়, কেজরীওয়ালেরও প্রবল জনসমর্থন রয়েছে পাকিস্তানে।’’ পাশাপাশি ফওয়াদ হুসেনের প্রতি রিজিজুর বার্তা, ‘‘৪ জুন আপনি হতাশ হবেন। দেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদীকেই বিপুল সংখ্যক আসনে জিতিয়ে আনতে চলেছে।’’