মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
পাহাড় নিয়ে ‘চিন্তা’ ততটা নয়, যতটা সমতল নিয়ে। লোকসভা ভোটের মুখে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে তৃণমূল প্রার্থীর পরিস্থিতি নিয়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত থাপার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে এমনই আলোচনা হয়েছে, দাবি সূত্রের। মঙ্গলবার দুপুরে ডুয়ার্সের চালসায় মমতার সঙ্গে দেখা করেন অনীত-সহ প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কয়েক জন কেন্দ্রীয় নেতা। তার আগে, সোমবার গভীর রাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শিলিগুড়িতে বৈঠক করেন অনীত। সেখানেও পাহাড় ও সমতলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই নেতার কথাবার্তা হয়েছে। সে রাতেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনীতের বৈঠকের সময়সূচি চূড়ান্ত হয়ে যায়।
অনীত থাপা বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেছেন, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পং মিলিয়ে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ভাল ফলাফল দেবে আশা করছে। কিন্তু সমতলের তিনটি বিধানসভা, বিশেষত, শিলিগুড়ি শহরের পরিস্থিতি সবাইকে ভাবাচ্ছে।’’
মোর্চা সূত্রের খবর, বৈঠকে দার্জিলিং আসন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ছাড়াও, উত্তরবঙ্গের গোর্খা প্রভাবিত এলাকাগুলিতে কী পরিস্থিতি, তা শুনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে দার্জিলিং পাহাড়ের পরিস্থিতির থেকে সমতলে শিলিগুড়ি মহকুমার ভোট নিয়ে মোর্চা নেতৃত্ব কিছু ‘উদ্বেগের’ কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। বিশেষ করে, সমতলের বিধানসভাগুলির ভোট নিয়ে মোর্চার নেতাদের মধ্যে নানা আশঙ্কা রয়েছে। পুরসভা, মহকুমা পরিষদ নির্বাচনের মতো তৃণমূল সমতলে ‘লিড’ নিতে বা ভাল ফল করতে না পারলে, এ বারেও দার্জিলিং আসন তাদের অধরা থেকে যেতে পারে বলে অনীতেরা মমতাকে জানিয়ে দিয়েছেন। দুই দলের নেতাদের মধ্যে আরও বোঝাপড়া এবং শহরের প্রচারে বাড়ি-বাড়ি জোর দেওয়া দরকার বলে মনে করছেন মোর্চা নেতারা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, অনীতদের কাছ থেকে সব শোনার পরে তৃণমূল নেত্রী দলীয় স্তরে বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন। অভিষেকের সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন বলে ঠিক রয়েছে। ইতিমধ্যে শিলিগুড়ির শহরে এবং গ্রামে তৃণমূলের তরফে প্রচার শুরু হয়েছে। দেওয়াল লিখন, ফ্লেক্স ঝোলানো, পতাকা টাঙানো চলছে। কিছু এলাকায় মিছিল, বৈঠক হলেও সব জায়গা তা সক্রিয় ভাবে হয়নি। বাড়ি-বাড়ি পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়নি। আবার শহরের অবাঙালি প্রভাবিত ওয়ার্ডে বা বিজেপির দখলে থাকা ওয়ার্ডে তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় নেতৃত্ব ততটা ‘সক্রিয়’ নন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূলের শিলিগুড়ি শহরের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘‘দল সর্বত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ছে। কিছু খামতি আছে। সেগুলি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে৷ মানুষ শান্তি, উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দেবেন।’’