বাঁ দিক থেকে, রাহুল গান্ধী এবং শরদ পওয়ার। — ফাইল চিত্র।
আগামী দিনে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কংগ্রেসে মিশে যাওয়ার ‘সম্ভাবনা’ সম্পর্কে এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ারের মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হল জল্পনা। প্রবীণ মরাঠা নেতা এ বার তাঁর দল এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার)-কে কংগ্রেসে মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমকে শরদ বলেছিলেন, ‘‘আগামী কয়েক বছরে দেশের অনেকগুলি আঞ্চলিক দলই কংগ্রেসের কাছাকাছি আসবে। তাদের মধ্যে কয়েকটি কংগ্রেসে মিশেও যাবে।’’ এর পরেই আলোচনা শুরু হয়, আড়াই দশক আগে সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বে প্রকাশ্যে অনাস্থা প্রকাশ করে নতুন দল গড়া শরদ আবার কংগ্রেসে ফিরতে চলেছেন।
বিজেপি এবং তার সহযোগী দলগুলি ইতিমধ্যেই কটাক্ষ শুরু করেছে এনসিপি প্রতিষ্ঠাতাকে। সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে শিন্ডেসেনায় নাম লেখানো প্রাক্তন সাংসদ সঞ্জয় নিরুপম বুধবার বলেন, ‘‘শরদজি তাঁর দলকে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশিয়ে দিতেই পারেন। কিন্তু শূন্যের সঙ্গে শূন্য জুড়লে শূন্যই হয়।’’
গত বছর এনসিপির অধিকাংশ বিধায়ককে নিয়ে শরদের সঙ্গ ছেড়ে তাঁর ভাইপো অজিত পওয়ার বিজেপির সহযোগী হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রিত্ব লাভের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের তরফে ‘আসল এনসিপি’ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে অজিতের গোষ্ঠী। দলের পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ও এখন অজিতের দখলে। এই পরিস্থিতিতে শরদ আবার কংগ্রেসে ফিরতে পারেন বলে মহারাষ্ট্রের অনেক নেতাই মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৯-এ সনিয়া-সহ দলের নেতাদের চিঠি পাঠিয়ে শরদ এবং তাঁর সঙ্গী পিএ সাংমা ও তারিক আনোয়ার বলেছিলেন— দেশের রাষ্ট্রপতি-উপরাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী পদে বিদেশি কোনও বংশোদ্ভূতের বসা অনুচিত। তার পরেই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ঢুকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সনিয়া।
এর পরে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যেরা বৈঠক করে ঐকমত্য হয়ে সনিয়ার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। দলের নেতাদের অনুরোধে সনিয়া ইস্তফা ফিরিয়ে নেন। সনিয়া কংগ্রেসে সভানেত্রীর পদে থেকে গেলেও শরদ-সাংমা-তারিকরা দল ছেড়ে এনসিপি গঠন করেন। সাংমা প্রয়াত হয়েছেন কয়েক বছর আগেই। তারিক কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। এ বার কি শরদের পালা?