—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভোটে কারচুপি রুখতে নানাবিধ পদক্ষেপ করছে নির্বাচন কমিশন। সেই পদক্ষেপের অঙ্গ হিসাবে এ বার ভোটের কাজে ব্যবহার করা সব গাড়িতেই থাকবে ‘জিপিএস লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম’। গত শনিবার ছিল প্রথম দফার নির্বাচনের ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ। সেই প্রশিক্ষণেই নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটকর্মীদের সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটের দিন ‘ডিসপার্সন সেন্টার অ্যান্ড রিসিপ্ট সেন্টার’ (ডিসিআরসি) থেকে ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার ভোট শেষ হয়ে গেলে তা আবার ‘স্ট্রং রুমে’ রেখে আসতে হয়। কিন্তু প্রায়শই অভিযোগ ওঠে ডিসি-আরসি থেকে নির্বাচন কেন্দ্র পর্যন্ত ইভিএম, ভিভিপ্যাডের মতো গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলি নিয়ে যাওয়ার সময় সেগুলিতে কারচুপি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছনোর আগে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে সেই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। আবার এমনও অভিযোগ ওঠে, ভোটগ্রহণের পর সেগুলি স্ট্রংরুমে রেখে আসার সময়ে কারচুপি করা হয়েছে।
এই সব অভিযোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার বিষয়টি প্রথম থেকে কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। এই কারণে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণে এ বিষয়ে অবগত করানো হয়েছে। ডিসিআরসি থেকে ভোটগ্রহণে যাবতীয় জিনিসপত্র নেওয়ার পর তা সঠিক ভাবে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছচ্ছে কি না সে বিষয়ে নজর রাখবে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে ডিসিআরসি থেকে জিনিসপত্র দেওয়ার পর তা সঠিক পথে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছেছে কি না জিপিএস মারফত সেই বিষয়ে নজর রাখা হবে। যদি কোনও ক্ষেত্রে একটু গোলমাল চোখে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন মারফত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট গাড়ির চালককে হেফাজতে নিয়ে প্রয়োজনে জেরা করার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। আবার কোথাও মাঝরাস্তায় গাড়ি থেকে ইভিএম লুট করার চেষ্টা হলেও যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে যাতে কোনও রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ না করতে পারে সেই কারণেই নতুন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভোটের কাজে ব্যবহৃত গাড়িতে এর আগের জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হত। সে ক্ষেত্রে বাছাই করা কিছু গাড়ির ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হত। কিন্তু এ বার নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা সব গাড়িতে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে চাইছে কমিশন, এমনটাই সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ অতীতে দেখা গেছে যে ডিসিআরসি থেকে গাড়ি বেরিয়ে উল্টো দিকে চলে যায় বিভ্রান্ত করার জন্য। অনেক সময় ইভিএম লুট করতে সাহায্য করার জন্যও ইচ্ছে করে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। সেটা এ বার আটকাবে।”