(বাঁ দিকে) সুপ্রিয়া সুলে এবং সুনেত্রা পওয়ার। — ফাইল চিত্র।
জল্পনা চলছিলই। সেটাই সত্যি হল। লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে হবে ননদ-বৌদির লড়াই! শরদ পওয়ার এবং অজিত পওয়ার সম্পর্কে কাকা-ভাইপো। কিন্তু মাস কয়েক আগে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টিতে ভাঙন ধরিয়ে এনডিএ শিবিরে যোগ দেন অজিত। এখন এনসিপিতেই দুই গোষ্ঠী। বিভক্ত পওয়ার পরিবারও। এই ‘কোন্দল’ এ বার ভোটে ময়দানেও। পওয়ারদের খাসতালুক মহারাষ্ট্রের বরামতীতে হবে দুই পওয়ারের সম্মুখ সমর। বরামতীর বিদায়ী সাংসদ সুপ্রিয়া সুলেকেই দাঁড় করিয়েছে শরদ গোষ্ঠী। শনিবার অজিতের এনসিপি ওই বরামতীতেই প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়েছে সুনেত্রা পওয়ারকে। তিনি মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিতের স্ত্রী।
শিবসেনার মতোই এনসিপিতেও এখন চলছে আসল-নকলের লড়াই। শরদ এবং অজিত পওয়ার— এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন দল ‘আসল এনসিপি’, তা নিয়ে শুরু হয়েছে আইনি লড়াই। সুপ্রিম কোর্টে মামলাও চলছে। সেই আবহেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট-যুদ্ধ। মহারাষ্ট্রে সকলের নজর পওয়ার-বাড়ির লড়াই নিয়ে। শনিবার অজিত গোষ্ঠীর তরফে সুনেত্রার নাম ঘোষণা করেন এনসিপি নেতা সুনীল তটকরে। প্রার্থী ঘোষণার সময় অবশ্য সুনীল বলেন, ‘‘এই লড়াইকে পারিবারিক কলহ হিসাবে না দেখে মতাদর্শের প্রতিযোগিতাই বলা সমীচীন।’’
কেন বরামতী এত গুরুত্বপূর্ণ মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে? বরামতী হল শরদের খাসতালুক। এনসিপি প্রতিষ্ঠাতা শরদ এই বরামতী থেকে টানা ছ’বার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন। লোকসভা নির্বাচনে জিতেছেন টানা পাঁচ বার, মোট ছ’বার। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কন্যা সুপ্রিয়াকে নিজের এই আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন শরদ। তার পর থেকে টানা তিন বার লোকসভা ভোটে সুপ্রিয়াই জিতেছেন এই আসন থেকে। সেই আসনেই এ বার সুপ্রিয়াকে তাঁর নিজের পরিবারের সদস্যের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
সুনেত্রা যেমন অজিতের স্ত্রী, তেমনই তিনি নিজেও রাজনৈতিক পরিবারের কন্যা। তাঁর ভাই পদ্মসিংহ পাটিল মহারাষ্ট্রেরই প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রীও। সুনেত্রা এবং অজিতের দুই সন্তান জয় পওয়ার এবং পার্থ পওয়ার। এঁদের মধ্যে জয় পারিবারিক ব্যবসা সামলালেও পার্থ সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি, তবে হেরে যান। সুনেত্রা নিজে সমাজকর্মী। বরামতীতে তিনি বহু কাজ করেছেন। তাঁর নিজস্ব একটি এনজিও রয়েছে।