গৌতম গম্ভীর এবং জয়ন্ত সিন্হা —ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা ভোটে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। শনিবার এ কথা জানিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিদায়ী বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত সিন্হা। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি এখন ভারত তথা বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার বিষয়ে কাজ করতে চাই। এ বিষয়ে যাতে আরও নজর দিতে পারি, সেই উদ্দেশ্যে দলের সভাপতি জেপি নড্ডাকে চিঠি লিখে ভোট থেকে অব্যাহতি চেয়েছি।’’
জয়ন্ত শনিবার বলেন, ‘‘দীর্ঘ ১০ বছর ধরে হাজারিবাগের মানুষের সেবা করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহজি কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। এটা আমার কাছে আশীর্বাদ।’’ শনিবারই দিল্লির বিদায়ী সাংসদ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর ভোটে না-দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের দু’বারের বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত একই ইচ্ছাপ্রকাশ করেন দলীয় নেতৃত্বের কাছে।
জয়ন্তের বাবা যশবন্ত হাজারিবাগ থেকেই বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালের লোকসভা ভোটে জিতে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০০৪ সালে হেরে গেলেও ২০০৯-এ হাজারিবাগ পুনরুদ্ধার করেন যশবন্ত। ২০১৪-তে বাবার লোকসভা কেন্দ্র হাজারিবাগ থেকেই জিতে আসার পরে জয়ন্তকে অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তার পরে বিমান মন্ত্রকের স্বাধীন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীও হয়েছিলেন। কিন্তু মোদীর দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রিত্ব পাননি জয়ন্ত।
যশবন্ত অবশ্য প্রথম থেকে বিজেপিতে ছিলেন না। আইএএস-এর চাকরি থেকে ১৯৮৪ সালে রাজনীতিতে এসে জনতা দলের সাংসদ হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের সরকারের অর্থমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। তার পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী এবং বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলানো যশবন্ত বিজেপি রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন মোদীর জমানায়। ২০১৮-তে বিজেপি ছাড়েন। ২০২১ সালের মার্চে নীলবাড়ির লড়াইপর্বে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। জয়ন্ত অবশ্য বিজেপিতেই থেকে গিয়েছিলেন।
২০২২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় যশবন্তকে প্রার্থী ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দলের সমর্থনও তিনি পেয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপির দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে হেরে যান। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজয়ের পরে প্রকাশ্যে নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে দল ভাঙানোর অভিযোগ তুলেছিলেন যশবন্ত। সেই সঙ্গেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছিলেন। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, যশবন্ত বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়ার পর থেকেই দলের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন জয়ন্ত। লোকসভা ভোটে টিকিট পাওয়া নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছিল। তা বুঝেই কি আগেভাগে সরে দাঁড়ালেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী?