নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
এনডিএ-র সংসদীয় দলনেতা নির্বাচিত হয়েই কংগ্রেস ও বিরোধী শিবিরকে নিশানা করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাতে ছিল তাচ্ছিল্য, ছিল ব্যঙ্গ।
কংগ্রেসের প্রাপ্ত আসন সংখ্যাকে তাচ্ছিল্য করে মোদী বুঝিয়ে দিতে চাইলেন তাঁর পাওয়া সংখ্যা, ‘চারশো পার’ না হলেও, বিরোধীদের তুলনায় এতটাই বেশি যে তাঁর সামনে সরকার ভেঙে যাওয়ার কোনও চ্যালেঞ্জ নেই। অন্য দিকে, ভোটের ফল নিয়ে কংগ্রেস তথা বিরোধীদের ‘উৎসব’কে ব্যঙ্গ করতেও ছাড়লেন না তিনি। মোদীর কথায়, ‘‘২০১৪, ২০১৯ এবং এ বারের ভোট মিলিয়ে কংগ্রেস যত আসন পেয়েছে একা বিজেপি-ই এ বারে তার থেকে বেশি আসন পেয়েছে।’’ এনডিএ-র এ বারের জয়কে ‘মহাবিজয়’ আখ্যা দিয়েছেন মোদী।
মোদী মনে করিয়ে দেন, ইভিএমে কারচুপি হচ্ছে বলে আগাগোড়া সরব ছিলেন বিরোধী নেতারা। নির্বাচন কমিশনকেও প্রতিপদে অপমান করা হয়েছে বলে শ্লেষ প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, ‘‘জনাদেশ বুঝিয়ে দিয়েছে, ইভিএমে কোনও ত্রুটি নেই।” কংগ্রেসকে খোঁচা দিতে গিয়ে বিদেশ সফরে গিয়ে রাহুল গান্ধীর ‘ভারতে গণতন্ত্র নেই’ মন্তব্যকেও আজ টেনে এনেছেন মোদী। বলেছেন, “আমি গোটা বিশ্বে বলে বেড়াচ্ছি ভারত গণতন্ত্রের জননী আর এরা তার উল্টোটা বলে যাচ্ছে। বলছে মোদী এসব বাজে কথা বলছে, ও চা-ওয়ালা থেকে কী করে এখানে পৌঁছে গেল, কোথাও গোলমাল আছে।’’ কেবল কংগ্রেস নয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কেও স্রেফ ‘ছবি তোলার জোট’ বলে খোঁচা দিয়েছেন তিনি।
ইভিএমের প্রতি তিনি কতটা আস্থাশীল এবং বিরোধীর কতটা অবিশ্বাসী তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন মোদী। বলেছে, ‘‘লোকসভার যখন ফল গণনা চলছিল, আমার কাছে একের পর এক ফোন আসছিল। আমি তাঁদের বলি, আসন সংখ্যার বিষয়টি বাদ দিন, ও পরে দেখা যাবে। আগে বলুন ইভিএম বেঁচে আছে না মরে গিয়েছে! বিরোধী দলের নেতারা স্থির করেছিলেন তারা মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস উঠিয়ে দেবেন। ক্রমাগত ইভিএম কে অপমান করে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ৪ জুন সন্ধ্যার পর সব চুপ। ইভিএম তাঁদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের শক্তি।’’ চব্বিশের লোকসভার ফলাফলকে বিজেপি তথা এনডিএ-র পরাজয় বলে দেখানোর চেষ্টা করেছে বিরোধীরা, এমন অভিযোগ করেছেন আজ মোদী। বলেছেন, ‘‘মানুষ জানেন যে আমরা কখনই হারিনি। বরং এনডিএ-র এই বিজয় আসলে মহাবিজয়।”
কংগ্রেসের ৯৯ আসনে জয়কে মোদীর কটাক্ষ করায় জবাব দিয়েছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘মোদীজি আগে নিজের আসনের অঙ্ক দেখুন। যে রাজ্যে পরমাত্মার প্রেরিত নরেন্দ্র মোদী মাত্র দেড় লক্ষ ভোটে জিতে এসেছেন, সেই এরই রাজ্যে রাহুল গান্ধী ৩ লক্ষ ৯০ হাজার ভোটে জিতে এসেছেন। অথচ নরেন্দ্র মোদী বলেন, তাঁর জন্ম জৈবিক ভাবে হয়নি। তিনি ‘বায়োলজিক্যাল’ নন। রাহুল গান্ধীর পাশের কেন্দ্র অমেঠীতে এক জন নশ্বর দেহের মানুষ কিশোরীলাল শর্মা ১ লক্ষ ৬৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছেন। অথচ ঈশ্বর প্রেরিত হলেও মোদীজি প্রথমে চার রাউন্ডে পিছিয়ে থেকে শেষপর্যন্ত মাত্র দেড় লক্ষ ভোটে জিতেছেন।’’