কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
একুশের নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস শূন্য পেয়েছিল। তার পরে সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন। তখন থেকে ‘সাগরদিঘি মডেলে’র কথা উঠে এসেছিল। এক দিকে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল, অন্যদিকে বাম কংগ্রেস জোট হয়েছিল। যার জেরে শাসকদল তৃণমূলকে কুপোকাত করে বিধানসভায় খাতা খুলেছিল কংগ্রেস।
সেই জয়ী প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস পরে তৃণমূলে যোগ দিলেও এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেই সাগরদিঘির মডেলে ভোট হবে বলে দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীর বলেন, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুরে ২৬৯টি বুথ লুট হয়েছিল। তাও তারা হারাতে পারেনি। এইবার সেই বুথ যাতে লুট না হয় তা নিশ্চিত করব। বহরমপুর এবং মুর্শিদাবাদ মানুষকে একটা কথা বলতে চাই, প্রত্যেকটা মানুষ বুথে যাবেন। ভোট যদি দিতে না পারেন আমাকে দায়ী করবেন। কথা দিচ্ছি আপনাদের সাগরদিঘি মডেল এ বার ভোট হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সাগরদিঘিতে কথা দিয়েছিলাম প্রত্যেকটা মানুষ বুথে যাবেন, আপনাদের ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা আমি দিলাম। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দিলাম নয়, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আমি দিয়েছিলাম। কারণ নির্বাচন কমিশন আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি এ বারে আদায় করেছি। তাই বহরমপুর এবং মুর্শিদাবাদের প্রত্যেকটা মানুষকে বলব নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে বুথে যাবেন, ভোট দেবেন। আর তৃণমূল মুক্ত মুর্শিদাবাদ গড়বেন।’’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের সেনাপতি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন তিনি বঙ্গ বিজেপির সেনাপতি। আজ বিকেলে বিজেপির প্রার্থী হয়ে বহরমপুরে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী। কী বলবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অধীর বলেন, ‘‘কিছু বলার নেই। এঁদের তো গিরগিটির রং। কখনও তৃণমূল করে, কখনও বিজেপি করে এবং আমার ধারণা আগামী দিনে আবার তৃণমূল করবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত বার তিনি বলেছিলেন অধীর চৌধুরীকে হারাতে না পারলে রাজনীতি নাকি করবেন না। আমি তাঁকে বলেছিলাম আপনার সঙ্গে লড়ে আমার পোষাবে না। আপনার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকুন কিংবা খোকাবাবুকে ডাকুন।’’ এর পরে অধীর বলেন, ‘‘আমাকে যদি হারাতে পারেন হয় দিদির পূর্ব সর্বাধিনায়ক (শুভেন্দু অধিকারী), না হয় দিদির বর্তমান সর্বাধিনায়ক(অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) আমি হয়তো রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’
জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘অধীরবাবু ভয় পেয়েছেন। তাই তাঁর কথার মধ্যে ভারসাম্য থাকছে না।’’ বিজেপির শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘গিরগিটির জন্মদাতা উনি নিজে।’’