অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ। তিনি এখন সিবিআই হেফাজতে। কিন্তু ১৫ দিন কেটে গেলেও সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনে অভিযুক্ত, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া উত্তম সর্দার এবং শিবু হাজরাকে কেন সিবিআই হেফাজতে চাইল না বা নিল না, সেই প্রশ্নই তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বসিরহাট লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের সমর্থনে বুধবার সেখানে সভা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক। সন্দেশখালি বসিরহাট লোকসভার মধ্যেই পড়ে। সেই সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘‘সন্দেশখালি নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু আজকে আর কোনও দল সন্দেশখালিতে যাচ্ছে না। কেন? তার কারণ, শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে।’’ সেই প্রসঙ্গেই অভিষেক বলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার কোনও ইডি অথবা সিবিআই করেনি। করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশই ধরেছিল সুদীপ্ত সেনকে।’’ এর পরেই অভিষেক বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে। তাঁদের কেন সিবিআই এখনও হেফাজতে চাইল না?’’
এই উত্তম এবং শিবু দু’জনেই ছিলেন স্থানীয় স্তরের তৃণমূল নেতা। পাশাপাশি, দু’জনেই এলাকায় ‘শাহজাহানের লোক’ বলে পরিচিত ছিলেন। দু’জনকেই রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘১৫ দিন কেটে যাওয়ার পরে এই দু’জনকে কেন হেফাজতে চাইল না সিবিআই? আজকে আমি বলছি বলে চার দিন পরে হেফাজতে চাইতে পারে। কিন্তু এখনও চায়নি।’’
সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে ফের অভিষেক বলেন, ‘‘তৃণমূল কাউকে রেয়াত করে না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শাহজাহান— কাউকে নয়। কেউ যদি ভাবে পঞ্চায়েতে জিতেছে বলে মানুষের সঙ্গে দুর্বব্যহার করবে, সাপের পাঁচ পা দেখবে, তা হলে তৃণমূল তা বরদাস্ত করে না।’’ একই সঙ্গে বিজেপির যে নেতাদের বিরুদ্ধে নারী নিগ্রহ, ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিষয়ে পদ্মশিবির যে কোনও পদক্ষেপ করে না, বুধবার তা-ও উল্লেখ করেন তৃণমূলের সেনাপতি। এ প্রসঙ্গেই, কুলদীপ সেঙ্গর, ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ, কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার কথা উল্লেখ করেন অভিষেক।
সন্দেশখালি নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। যার উত্তাপ পৌঁছেছিল জাতীয় রাজনীতির উঠোনেও। তার পর এই প্রথম বসিরহাটে গেলেন অভিষেক। যে সময়ে সন্দেশখালি উত্তপ্ত তখন অভিষেক বলেছিলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি সেখানে যাবেন। গত এক-দেড় সপ্তাহে সন্দেশখালি নিয়ে বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে এর মধ্যে সিবিআই সেখানে গিয়েছে তল্লাশি চালাতে। সন্দেশখালিতে যখন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ জমি লুটের অভিযোগ তুলেছিল, তখন অভিষেকের নির্দেশেই সেখানে দফায় দফায় গিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। অভিযোগ নিয়ে জমি লিজ়ের টাকা ফেরতেরও বন্দোবস্ত করেছিল তৃণমূল।