Lok Sabha Election 2024

তিনি কি ‘বাংলার শিন্ডে’ হবেন? বিজেপির সমর্থনে বসবেন নবান্নে? অকপট জবাব তৃণমূল সেনাপতির

মহারাষ্ট্রের ঘটনা দিয়ে অনেকে অভিষেককে রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে জুড়ে দেখাতে চাইছিলেন। এক সময়ে সেই জল্পনা দাবানলের আকার নিয়েছিল। যাতে অনুঘটক হয়েছিল তৃণমূলের সেনাপতির সাম্প্রতিক গুটিয়ে থাকা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৭
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েক মাস ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দূরত্ব’ নিয়ে তৃণমূল তো বটেই, সামগ্রিক ভাবে বাংলার রাজনীতিতেও জোরালো আলোচনা এবং জল্পনা রয়েছে। সেই আবহে রাজনৈতিক মহলে বিরোধীদের কেউ কেউ, বিশেষত বাম-কংগ্রেসের নেতারা এই রকম একটা জল্পনা ভাসিয়ে দিয়েছেন যে, অভিষেক এই রাজ্যের ‘একনাথ শিন্ডে’ বা ‘অজিত পওয়ার’ হতে পারেন। যার অর্থ পরিষ্কার। তৃণমূলের বিধায়কদের একটা বড় অংশকে অভিষেক ভাঙিয়ে নেবেন, মমতা নবান্নচ্যুত হবেন আর নীলবাড়ির ১৪ তলায় বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়ে বসবেন অভিষেক। দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ের আগে সে ব্যাপারে আনন্দবাজার অনলাইনে অকপটে জবাব দিলেন তৃণমূলের সেনাপতি।

Advertisement

অভিষেক জানিয়ে দিয়েছেন, প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কোনও বাসনা, কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাঁর নেই। তিনি সংগঠনের কাজেই স্বচ্ছন্দ। বস্তুত, অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেছেন, কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় এলেও তিনি কখনও মন্ত্রী হবেন না। কারণ একটাই— তাঁর প্রশাসনে যাওয়ার কোনও ইচ্ছাই নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি আগেও যা বলেছিলাম, এখনও তাই বলছি। আমি সংগঠনের কাজেই নিজেকে যুক্ত রাখতে চাই। প্রশাসনে যাওয়ার আমার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই।’’ বাংলায় শিন্ডে বা পওয়ারের কথা উল্লেখ করে যাঁরা ‘গুঞ্জন’ তৈরি করছেন, তাঁদের সেই সমস্ত বক্তব্যকে ‘বোগাস’ বলে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। পাশাপাশিই বলেছেন, ‘‘এ কথা আমার কানে কখনও আসেনি। তবে যাঁরা এ সব কথা রটাচ্ছেন, তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন!’’

ব্যক্তি মমতা এবং দল হিসেবে তৃণমূলের প্রতি আনুগত্য বোঝাতে একই নিঃশ্বাসে অভিষেক বলেছেন, ‘‘আমার গলা কেটে দিলেও তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ আর জয় বাংলা বেরোবে।’’ অভিষেক এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বিজেপির সামনে তিনি মাথা ঝোঁকাবেন না। তাঁকে গ্রেফতার করলেও নয়। এত বার এজেন্সি ডাক পাঠালেও নয়। তাঁকে জেলে ভরে দিলে? চোয়াল শক্ত করে অভিষেক বলেন, ‘‘ক’দিন ভেতরে রাখবে? এক বছর, দু’বছর, তিন বছর! তার পর? তার পর তো বেরোবই! তখন?”

Advertisement

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের স্নেহধন্য ছিলেন শিন্ডে। সেই শিন্ডেই বালাসাহেবের পুত্র উদ্ধবের হাত থেকে আসল শিবসেনার ‘হলমার্ক’ কেড়ে নিয়েছেন। এখন তিনি বিজেপির সমর্থনে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। মরাঠা মুলুকেই কাকা শরদ গোবিন্দ পওয়ারের হাত থেকে এনসিপির নাম ও ‘ঘড়ি’ প্রতীক কেড়ে নিয়েছেন ভাইপো অজিত। এখন তিনিও মহারাষ্ট্রের বিজেপি মন্ত্রিসভার অন্যতম অংশ। মহারাষ্ট্রের সেই ঘটনাপ্রবাহ দিয়েই অনেকে অভিষেককে বিজেপির সঙ্গে জুড়ে এমন সম্ভাবনার বিষয়টি দেখাতে চাইছিলেন। যাতে কিঞ্চিৎ হলেও অনুঘটকের ভূমিকা নিয়েছিল তৃণমূলের সেনাপতির সাম্প্রতিক গুটিয়ে থাকা। বিরোধী শিবিরের একাংশ ওই জল্পনা ‘ছড়িয়ে’ দিয়ে শাসক শিবিরের অন্দরে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল বলেও তৃণমূলের একাংশ মনে করেন। কিন্তু অভিষেক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ সব জল্পনা অর্থহীন। মমতাই তাঁর নেত্রী। মমতার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ থাকবে তৃণমূল। তিনি কাজ করে যাবেন সাংগঠনিক পরিসরেই। প্রশাসনে নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement