মঙ্গলবার ভোটগণনার দিন শুনশান আপ দফতর। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
গত দু’টি লোকসভার মতোই এ বারেও দিল্লিতে একটি আসনও জিততে ব্যর্থ হল আম আদমি পার্টি। তবে পঞ্জাবে কোনওক্রমে মুখরক্ষা হয়েছে অরবিন্দ কেজরীওয়ালের। পঞ্জাবে তিনটি আসন জিতেছে আপ। এই ফল ফের স্পষ্ট করে দিল, পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লিবাসীর পছন্দ আপ হলেও, লোকসভায় টানা তিন বার সবক’টি আসনে জিতল বিজেপি। কেজরীওয়ালের দুর্নীতিতে ‘ত্র্যস্ত’ দিল্লিবাসী আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে বেছে নিতে চলেছে বলে এখন থেকেই সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির।
অথচ ছবিটি এ বার অনেকটাই আলাদা হবে বলে আশা করেছিলেন আপ নেতৃত্ব। লোকসভা ভোট ঘোষণার কিছু দিন পরেই আবগারি দুর্নীতিতে গ্রেফতার হন কেজরীওয়াল। দিল্লি ও পঞ্জাবের ভোটের মুখে ভোটের প্রচার করার জন্য তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সহানুভূতির মঞ্চ প্রস্তুত ছিল কেজরীওয়ালের জন্য। সেই সুযোগ তিনি কাজেও লাগান। দিল্লিবাসীর কাছে আবেদন করে বলেন, দলীয় প্রতীক ঝাড়ুতে ভোট দিতে। যাতে তাঁকে আর জেলে যেতে না হয়।
আপ নেতৃত্ব আশা করছিলেন, দিল্লিতে যে চারটি আসনে (বাকি তিনটিতে কংগ্রেস) দল লড়ছে, সেগুলির মধ্যে অন্তত তিনটিতে জিতছে চলেছে দল। পঞ্জাবেও ক্ষমতাসীন দল হিসাবে গোটা পাঁচেক আসন জিতবে আপ। কিন্তু পঞ্জাবে কেবল তিনটি আসন জিতেছে তারা। দিল্লিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলেও পঞ্জাবে এনডিএ জোটকে রুখতে আলাদা লড়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস ও আপ। ফলাফল বলছে, তুলনায় পঞ্জাবে ভাল ফল করেছে রাহুল গান্ধীর দল। সাতটি আসন পেয়েছে কংগ্রেস।
কেন এমন ফল হল তা বুঝতে হিমশিম খাচ্ছেন আপ নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘কোথায় খামতি থেকে গেল, তার সমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের হিসাবে আমজনতা আমাদের ভোট দিয়েছিলেন। সেই ভোট কোথায় গেল, তা দেখতে হবে।’’ তবে রাজনীতির অনেকের মতে, দিল্লিবাসী হলেন দেশের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ভোটার। তাঁরা জানেন, রাজ্যে আপ থাকলে খয়রাতির রাজনীতি বজায় থাকবে। আর কেন্দ্রে বিজেপি থাকলে রাজধানীর নিরাপত্তা সুরক্ষিত থাকবে। গত তিনটি লোকসভাতে সেই সমীকরণ মেনেই ভোট দিয়েছেন দিল্লিবাসী।
শেষবেলায় প্রচারে নেমে কেজরী সহানুভূতি ভোট কুড়িয়ে নেবেন, সেই আশঙ্কা ছিল বিজেপি শিবিরেও। গোড়ায় একাধিক আসনে আপ এগিয়ে থাকলেও, দুপুরের পর থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় ফের সাতটি আসনেই জিততে চলেছে বিজেপি।
আজ বিজেপির দিল্লির সদর দফতরে এক জন নেতাই ছাতি ফুলিয়ে ঘুরছিলেন। তিনি দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব। বলেন, ‘‘আপের দুর্নীতি দেখে মানুষের মোহ ভেঙে গিয়েছে। তাই ভোটারেরা বিজেপিকে ফের বেছে নিয়েছেন। আগামী বিধানসভায় আপ পরাজিত হবে বিজেপির কাছে।’’