—প্রতীকী ছবি।
অশান্তি এড়াতে নজিরবিহীন ভাবে নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে শুরু করেছে। সোমবার, প্রথম দফায় হুগলিতে এল ৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এর মধ্যে ৩ কোম্পানি চন্দননগর কমিশনারেট এবং ২ কোম্পানি গ্রামীণ পুলিশ জেলার জন্য। রাতে রিষড়ায় রুটমার্চও করে তারা।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত জাভালগি জানান, আগামী ৭ তারিখ আরও ২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কমিশনারেট এলাকায় আসবে। পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কামনাশিস সেন জানান, ১ কোম্পানি করে চণ্ডীতলার কলাছড়া এবং আরামবাগের হরিণখোলা 'ফ্লাড সেন্টার'-এ রাখা হয়েছে। এখানে আজ, মঙ্গলবার থেকে রুটমার্চ শুরু হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের জন্য হুগলি জেলায় মোট ১২ কোম্পানি আধাসেনা আসার কথা। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কমিশনের নির্দেশ মেনেগাড়ি পাঠিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসা হয়েছে। বাহিনীর থাকা-খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরো জানা গিয়েছে, বিগত কয়েকটি ভোটের বছরের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন জেলার পরিস্থিতি আগাম খতিয়ে দেখে কমিশন। রিপোর্ট দেখে কোন রাজ্যের জন্য কত কোম্পানি বাহিনী চাইতে হবে তা ঠিক করে তারা। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর সেইমতো ব্যবস্থা নেয়।
আগে বাহিনী এলেও তার ব্যবহার কতটা হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে দুই বিরোধী দল। সিপিএমের হুগলি জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের প্রশ্ন, "বাহিনী এলে কী হবে! তাদের সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হবে তো?" তাঁর দাবি, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কমিশনের ঘোষিত যথেচ্ছ কেন্দ্রীয় বাহিনী হুগলিতে আসেনি। যতটা এসেছিল, ততটা সঠিক ভাবে ব্যবহার করাও হয়নি। তাই ভোট লুট হয়েছে। কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক বিদ্যুৎবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, "দিদি-মোদীর সেটিং চলছে। দেখা যাক, কতটা সুষ্ঠু ভোট হয়, কতটা বাহিনী ব্যবহার হয়।’’
তবে, বিজেপির রাজ্য কমিটির সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহের দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ভোট লুট হয়, সন্ত্রাস হয়। এটা সত্য। তেমন এটাও সত্য যে, বিজেপি বিষয়টা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়াতেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন সতর্ক হয়েছে। তিনি বলেন, "আগে থেকে বাহিনী এসেছে। আশা করছি তৃণমূলের সন্ত্রাস কমবে।’’
বিরোধীরা যা-ই বলুন, তৃণমূল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিচিলিত নয়। দলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের দাবি, 'সেটিং' বিজেপির সঙ্গে সিপিএম ও কংগ্রেস করেছে। তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনী এল কী গেল, তৃণমূলের ভেবে লাভ নেই। ভোটে মানুষই শেষ কথা। লোকসভায় মানুষ যা জবাব দেবে, আমরা মাথা পেতে নেব।’’