Lok Sabha Election 2024

ভারতীয় প্রমাণে কেটে গেল ৩৪৭ দিন! জেল থেকে মুক্তি পেয়ে অভিমানী রঙ্গোলিরা বলছেন, ‘ভোটই দেব না’

ইটভাঁটায় কাজ করতে এসে হারিয়ে গিয়েছিলেন। বিদেশি সন্দেহে এক বছর জেলে থাকার পর মুক্তি পেলেন জামুড়িয়ার বাসিন্দা দুই আদিবাসী মহিলা। অভিমানে ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ১৭:০৩
Share:

জেল থেকে মুক্তি রঙ্গোলি, নিশার। — নিজস্ব চিত্র।

কাজ করতে এসে হারিয়ে গিয়েছিলেন। তার পর পুলিশের কাছে। কোলে শিশু নিয়ে জেল, আদালতের চৌহদ্দি পার করে আবার খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে পারছেন আদতে পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা দুই আদিবাসী মহিলা। কিন্তু মাঝখানে কেটে গিয়েছে ৩৪৭ দিন। ভাষা সমস্যার কারণে যে হয়রানির শিকার হতে হল, তা থেকে দুই মহিলা পণ করেছেন, ভোটই দেবেন না আর!

Advertisement

২০২৩ সালের ২৪ মে নদিয়ায় নাকাশিপাড়ার একটি ইটভাঁটায় কাজ করতে এসে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার বাসিন্দা দুই আদিবাসী মহিলা রঙ্গোলি পাসি ও নিশা বেজের। কোলে দুধের শিশুকে নিয়ে নাকাশিপাড়ায় জাতীয় সড়কের উপর অপেক্ষা করছিলেন রঙ্গোলি এবং নিশা, যদি বাড়ির লোক এই পথে তাঁদের খুঁজতে আসে। বাড়ির লোক আসেনি কিন্তু আচরণে অসঙ্গতি দেখে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ। কিন্তু ভাষা সমস্যার জেরে পুলিশকে কিছুই বুঝিয়ে উঠতে পারেননি। বিদেশি সন্দেহে পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁদের। আদালতগ্রাহ্য কোনও ভাষা না জানায় বার বার খারিজ হয়ে যায় তাঁদের জামিনের আবেদনও। শেষে, এক আইনজীবীর সহায়তায় ৩৪৭ দিন জেলবন্দি থাকার পর শনিবার আদালতের রায়ে মুক্ত হলেন জামুড়িয়ার বাসিন্দা দুই আদিবাসী মহিলা-সহ শিশুরা। আগামী ১৩ মে নির্বাচন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে। যে দেশ তাঁদের নাগরিকত্ব নিয়েই সন্দেহ করেছে, সে দেশে আর ভোট নয়! ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বোঝান অভিমানী রঙ্গোলি।

আদালতের রায়ে মুক্তি পেয়ে রঙ্গোলি বলেন, ‘‘আমরা ভারতের লোক, এটা প্রমাণ করতে এক বছর লাগল। নাগরিকই যখন নই, তখন আর ভোট দেব কেন?’’ মহিলাদের আইনজীবী সুমন সাহা বলেন, ‘‘প্রায় ৩৪৭ দিন জেলে থাকার পর বর্তমানে কৃষ্ণনগর জেলা ও দায়রা আদালতে বিচারপতি অর্ণব মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে বেকসুর খালাস পেলেন দুই মহিলা। তাঁরা যে বাংলাদেশি, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। দীর্ঘ এক বছর মামলা চলার পর মিলল মুক্তি।’’ এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement