বিজেপির সভায় দলের বীরভূম জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তোপের মুখে পড়ে নিজের হুমকিমূলক মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন বিজেপি-র বীরভূম জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল। বৃহস্পতিবার রামপুরহাটে দলীয় জনসভায় তৃণমূল কর্মীদের হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন দুধকুমার। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার নিজের কৃতকর্মের জন্য দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহকে চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বও তাঁকে সাফ বার্তা দিয়েছেন, এটাই শেষ সুযোগ। এর পরে এ ধরনের মন্তব্য করলে তাঁকে কঠোরতম শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, হুমকির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুধকুমারের ক্ষমাপ্রার্থনা এবং দলের তরফে তাঁকে ভর্ৎসনা করার ঘটনা রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নজিরবিহীন। তৃণমূলের বহু নেতা, সাংসদ, মন্ত্রীকে ইদানীং কালে প্রায়ই নানা উস্কানিমূলক এবং হিংসাত্মক মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। দুধকুমারের প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এ ব্যাপারে অগ্রগণ্য। কিন্তু অনুব্রত তো বটেই, তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাই হিংসাত্মক মন্তব্য করে সমালোচিত হওয়ার পরও তাতে অনড়ই থেকেছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকেও এ ধরনের ক্ষেত্রে কড়া বার্তা দেওয়ার রেওয়াজ খুব একটা নেই।
বৃহস্পতিবার দুধকুমার বলেছিলেন, “পাড়ার ছেলেরা একটু বিজেপি-র হয়ে মিটিং-মিছিলে হাঁটছে। তৃণমূলের গুন্ডারা তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এখন থেকে দাপাচ্ছে, শাসাচ্ছে, ভয় দেখাচ্ছে। তৃণমূলের এই সন্ত্রাসবাদী গুণ্ডাদের বলব, হাতটা গুটিয়ে নাও, হাতটা নামিয়ে নাও! আমরা সন্ত্রাস চাই না। সন্ত্রাসের কোনও শিকার যদি বিজেপি-র কর্মীরা হন, পার্টি করার জন্য যদি আক্রমণ আসে, ওই হাত কিন্তু ঘর থেকে বের করে নিয়ে বিজেপি-র ছেলেরা কেটে নেবে বন্ধু!” এই মন্তব্যের কথা জানাজানি হতেই রাহুলবাবু জানিয়েছিলেন, দল এই ধরনের মন্তব্য অনুমোদন করে না। তাঁরা আইনের শাসন এবং শান্তির পক্ষে। এ দিন রাহুলবাবুকে পাঠানো চিঠিতে দুধকুমার লিখেছেন, ‘এ রূপ বক্তব্যের জন্য আমি সমস্ত স্তরের নাগরিক এবং দলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী’। দুধকুমারের আরও বক্তব্য, বিজেপি কর্মীদের উপরে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের অত্যাচারের বর্ণনায় উত্তেজিত হয়ে তিনি ওই মন্তব্য করে ফেলেছিলেন এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হবে না। সিদ্ধার্থনাথের কথায়, “দুধকুমার বলেছেন, তিনি সন্ত্রাসের মুখে পড়ে ওই ধরনের কথা বলে ফেলেছেন। সন্ত্রাসের শিকার হলে মনের অবস্থা খারাপ হয় ঠিকই। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই দল ওই ধরনের মন্তব্য অনুমোদন করে না। কোনও দলের কারও কাছ থেকেই এই ধরনের মন্তব্য আসা উচিত নয়।”