মুলায়মের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে হাত মেলানোর যাবতীয় সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মায়াবতী।
বিজেপিকে রুখতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে মুলায়ম-মায়াবতীর জোট বাঁধা উচিত বলে দিন কয়েক আগে মন্তব্য করেছিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব। লালুর সেই পরামর্শের প্রেক্ষিতে বুধবার মুলায়ম সিংহ বলেন, “লালুপ্রসাদ যদি উদ্যোগী হন, তবে বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে হাত মেলাতে আমার কোনও আপত্তি নেই।” যদিও মুলায়মের সে ইচ্ছাতে জল ঢেলে দিয়েছেন স্বয়ং মায়াবতী। তিনি বলেন, “সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মেলানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”
সম্প্রতি বিহারে ২৩ বছর পর লালুর আরজেডি-র সঙ্গে জোট গড়েছে নীতীশের সংযুক্ত জনতা দল। গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি-র উত্থান দু’দলেরই মনোবলে চিড় ধরিয়েছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচন তাই দু’দলের কাছেই অস্তিত্বের লড়াই। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে দীর্ঘ দিনের বিভেদ ভুলে হাত মিলিয়েছিলেন যুযুধান দু’পক্ষ। প্রতিবেশী রাজ্যেও সিঁদুরে মেঘ দেখে লালু নিজের ঘর সামলে উত্তরপ্রদেশে এসপি-বিএসপি-র জোটের পরামর্শ দেন। গত লোকসভা নির্বাচনে সেখানকার বিজেপি-র ফলাফলে চোখ কপালে উঠেছে বিরোধীদের। মোদী ঝড়কে কাজে লাগিয়ে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭৩টি-ই নিজেদের দখলে রাখে অমিত শাহের নেতৃত্ব।
লালু যদিও আকাশকুসুম কোনও ভাবনার কথা বলেননি। কারণ এর আগেও উত্তরপ্রদেশে বিধানসভায় লড়েছে এসপি-বিএসপি জোট। সেটা ১৯৯৩ সাল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সেই জোটে ফাটল ধরে। গত ২০ বছরে অবশ্য পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। বিভিন্ন সময়ে এই দুই দল অন্য দলের সাহায্য নিয়ে রাজপাট সামলেছে। কিন্তু জোটের পথে হাঁটেনি। লালুর সাম্প্রতিক মন্তব্যে একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। এ দিনের মুলায়মের বক্তব্য জোটের পথে পা বাড়িয়েছিল এক ধাপ। কিন্তু বাধ সাধলেন বিএসপি নেত্রী।
কিন্তু সপা-র সঙ্গে কেন হাত মেলালেন না মায়াবতী?
সংসদ ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “সপা যত বারই ক্ষমতায় এসেছে, রাজ্যে অপরাধ, জাতিগত সংঘর্ষ, ধর্ষণ, ডাকাতির মতো ঘটনা বেড়েছে। এটাই ওই দলের চরিত্র। এর বদল না হলে দলটাই উঠে যাবে।’’ এ সব বিষয় মাথায় রেখেই জোটের প্রশ্নে তিনি অনড় বলে জানিয়েছেন বিএসপি প্রধান। রাজ্যের মানুষ এখন তাঁকেই ক্ষমতায় দেখতে চান। তাঁর মন্তব্য: “তাঁরা মনে করেন, মায়াবতী সরকারে এলেই রাজ্যে ফের শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরে আসবে।”
একক ভাবে সরকার গঠন কি সম্ভব?
মায়াবতীর মতে, সপা এবং বিজেপি দু’পক্ষই রাজ্যে জাতিগত সংঘর্ষের জন্য দায়ী। সাধারণ মানুষ সেটা বুঝেছেন। কাজেই একক ভাবে লড়বে বিএসপি। তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত রাজ্যের মানুষ ক্ষমতায় ফিরে আসতে আমাকে সাহায্য করবেন। এ জন্য অন্য কোনও দলের প্রয়োজন পড়বে না।” তিনি ক্ষমতায় এলে ধর্ষণ, দাঙ্গার মতো ঘটনায় ইতি পড়বে বলে দাবি করেন তিনি।