আগামী সোমবার থেকে কলেজের ছাত্রদের পরীক্ষা শুরু। আর তার আগে কলেজের অধিকর্তার অপসারণ ও বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়া-সহ পাঁচ দফা দাবিতে ক্লাস বয়কট করে বিক্ষোভ দেখালেন কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভ চলাকালীন অধিকর্তা-সহ অন্যান্য আধিকারিককে কলেজে ঢুকতে বিক্ষোভরতরা বাধা দেন বলেও অভিযোগ। এ দিন বিক্ষোভের জেরে ব্যাহত হয় কলেজের পঠনপাঠন।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপনগরীতে ১৯৯৮ সালে চালু হওয়া এই বেসরকারি কলেজে বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকা-অশিক্ষক কর্মী মিলিয়ে রয়েছেন ১৩০ জন। কলেজ পরিচালনায় রয়েছে কোলাঘাট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের সভাপতি সৌমিত্র দে-র অভিযোগ, গত জুলাই মাসে কলেজ অধিকর্তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, আর্থিক সঙ্কটের কারণে শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের পদোন্নতি ও নতুন কর্মী নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু ওই নোটিস দেওয়ার পরও গোপনে সম্প্রতি কলেজের এক অধ্যাপককে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পদোন্নতির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের আরও অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের বেতন কাঠামো বৃদ্ধি হয়নি ও প্রাপ্য দু’কিস্তি মহার্ঘ ভাতা বকেয়া রয়েছে। এ বিষয়ে একাধিক বার কলেজের অধিকর্তা ও পরিচালন সমিতি কাছে দাবি জানানো হলেও সুরাহা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষিকার কথায়, “১২ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনার জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ওই অধ্যাপককে নিয়োগ করা হয়নি। ওটা পদোন্নতি মাত্র। কর্তৃপক্ষের ওই দাবি ঠিক নয় বলেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি।” সৌমিত্রবাবু বলেন, “নিয়ম বহির্ভূত ভাবে এই নিয়োগের জন্য কলেজের অধিকর্তার অপসারণ চাওয়া হয়েছে। ওই অধ্যাপকের পদোন্নতির নিয়োগ বাতিল করতে হবে।” এমনকী, কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আলোচনায় না বসলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনের কথাও জানান তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের পঠন-পাঠন ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ-অবস্থানের জেরে বন্ধ ছিল কলেজের ক্লাস।
তবে শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের তোলা অভিযোগ নিয়ে কলেজের পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রসূন চক্রবর্তী বলেন, “ওই অধ্যাপকের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশেষ ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে কলেজের পড়ুয়াদের পরীক্ষা শুরুর কথা। তা সত্ত্বেও শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা এ দিন বিক্ষোভ দেখান। সমস্যা মেটানোর জন্য জরুরি বৈঠক করা হচ্ছে।”