সংসদে বিক্ষোভ প্রদর্শন বিরোধী দলের। সোমবার পিটিআইযের তোলা ছবি।
সনিয়া গাঁধীকে নিয়ে গিরিরাজ সিংহের বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে সোমবার দ্বিতীয় দফার বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। গত ২ এপ্রিল কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া সম্পর্কে কেন্দ্রের ছোট ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, “রাজীব গাঁধী যদি কোনও নাইজেরীয় মহিলাকে বিয়ে করতেন, তা হলে কি তিনি কংগ্রেসের সভানেত্রী হতে পারতেন? সনিয়া গাঁধীর গায়ের রং সাদা বলেই তিনি কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।” গিরিরাজকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবি তুলে এ দিন বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে কংগ্রেস সাংসদরা সরব হন। পাশাপাশি, তাঁরা গিরিরাজের ইস্তফার দাবিও জানান। কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, “গিরিরাজের এই মন্তব্য শুধু এ দেশের মহিলাদের প্রতি নয়, প্রত্যেক নাগরিক এমনকী নাইজেরীয়দেরও প্রতি অসম্মান।” তাঁর সঙ্গে সুর মেলান কংগ্রেসের অন্য সাংসদরাও। নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন গিরিরাজ। তিনি বলেন, “কাউকে অপমান করার উদ্দেশ্য ছিল না, যদি আমার কথায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন তার জন্য দুঃখিত।”
তুমুল হইহট্টগোলের মধ্যে এ বিষয়ে কংগ্রেস সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু জানান, গিরিরাজের এ ধরনের মন্তব্য কোনও ভাবেই কাম্য নয়। কিন্তু তাতেও শান্ত হননি কংগ্রেস সাংসদরা। তাঁরা এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীকেও ক্ষমা চাইতে বলেন। বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত সভা মুলতুবি করে দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন।
ফের সভা শুরু হলে কেন্দ্রের তরফে জমি অধিগ্রহণ বিল পেশ করেন বিজেপি সাংসদ রাজীবপ্রতাপ রুডি। এ বারও প্রতিবাদ জানাতে থাকেন কংগ্রেস সাংসদরা। ফলে ফের দুপুর ২টো পর্যন্ত সভা মুলতুবি হয়ে যায়।
দ্বিতীয় দফার অধিবেশনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিটি দলকেই সভা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনায় সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু, এ দিন প্রথমেই গিরিরাজের মন্তব্যের প্রতিবাদে এক বার সভা মুলতুবি হয়ে যায়। পরে জমি অধিগ্রহণ বিলের প্রস্তাব উঠলে আরও এক বার। জমি বিল নিয়ে সংসদে কংগ্রেস-সহ অন্য দলগুলি যে বিরোধিতা করবেন সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে কৃষক সভায় গিয়ে সে রকমই বার্তা দিয়েছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। কেন্দ্রকে এ বিষয়ে যে কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না, সে বার্তা দিয়েছিলেন সনিয়াও। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় দল সংসদের ভিতরে-বাইরে যে আওয়াজ তুলবে ওই দিন সেই বার্তাও দিয়েছিলেন তাঁরা।