নির্বাচনী প্রচারে মোদী। জম্মুতে সোমবার পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
বুলেটের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ব্যালট। জম্মু-কাশ্মীরবাসী এত ঠান্ডার মধ্যেও শেষ দু’দফায় ৭০-৭২ শতাংশ ভোট দিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরি করে এ কথাই প্রমাণ করেছেন। তৃতীয় দফা নির্বাচনের আগের দিন, সোমবার উপত্যকাবাসীকে এ কথা বলে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শ্রীনগরের শের-ই-কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ দিন মোদীর নির্বাচনী জনসভা ছিল। কাশ্মীরের উন্নয়নের পাশাপাশি রাজ্য রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র বিষয়েও এ দিন সরব হন মোদী। জাতপাত, সম্প্রদায়, প্রাদেশিকতাবাদ কিছুই নয়, গোটা দেশ এখন এক। দেশে নতুন রাজনীতির হাওয়া বইছে। মোদীর কথায়: “সেই নতুন রাজনীতির নাম উন্নয়ন।” উন্নয়নের পথে জম্মু-কাশ্মীরকে সামিল করতে তাঁর আবেদন, কংগ্রেস, ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে আর সুযোগ নয়, রাজ্যে বিজেপি-র সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে হবে। মোদী বলেন, “কংগ্রেস, বাবা-ছেলের দল অথবা বাবা-মেয়ের দল আপনাদের জন্য কোনও উন্নয়ন করেছে কি?” সমবেত জনতার ‘না’ জবাবকে কেড়ে নিয়ে তিনি জানান, বিনা পরিশ্রমে মালাইয়ের ভাগ পেত যে! এরই পাশাপাশি মোদী এ দিন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে উপত্যকা থেকে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া।
সন্ত্রাস বনাম গণতন্ত্র প্রসঙ্গে মোদীর মত, যে আঙুল একে-৪৭ রাইফেলের ট্রিগার চাপে, তার থেকে বহু গুণ শক্তিশালী সেই আঙুল, যা বৈদ্যুতিন ভোটগ্রহণ যন্ত্রের (ইভিএম) বোতাম চাপে। তিনি বলেন, “প্রথম আঙুলটি কারও জীবন নিতে পারে। কিন্তু পরের আঙুলটি দেশের মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।” এ দিন তিনি বেপথে চলে যাওয়া উপত্যকার যুবকদের উদ্দেশে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানান। তাঁর কথায়, “একে-৪৭-এর ভার ওদের কাছে ভারী বলে মনে হতে শুরু করেছে। এদের হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন আসুক। কম্পিউটারও দেওয়া উচিত। তারা যে নতুন স্বপ্ন দেখতে সমর্থ!”
মোদীর সফর ঘিরে এ দিন সকাল থেকেই শের-ই-কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আকাশে চক্কর কেটেছে সেনা-কপ্টার। পুলিশ কুকুর এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি চালানো হয় গোটা স্টেডিয়ামে। গোটা শ্রীনগর শহর পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীতে ছিল ছয়লাপ। স্টেডিয়ামমুখী সব রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়। রবিবারই প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রীকর জানিয়ে দিয়েছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতির উপর তিনি সর্ব ক্ষণ নজর রাখছেন।
মঙ্গলবার উপত্যকায় তৃতীয় দফার ভোট। গত শুক্রবার ভোর থেকে জম্মু-কাশ্মীরের চারটি জায়গায় জঙ্গি হামলা চালানো হয়। ঘটনায় ১১ সেনা-পুলিশ-সহ নিহতের সংখ্যা ২১। এ দিন মোদি ওই চার জায়গার একটিতে যাবেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।