মালদহে সিপিএমের বন্‌ধ সফল বলে দাবি দলীয় নেতাদের

কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ ও কয়েক জন কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মালদহে বন্‌ধ ডেকেছিল সিপিএম। বুধবার সেই বন্‌ধের প্রভাবে এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়ে পড়ে। এ দিন সকাল থেকেই মালদহ এবং ইংরেজবাজার শহরের প্রায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ ছিল। পথে নামেনি কোনও বেসরকারি যানবাহন। হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি বাস চলতে দেখা গিয়েছে। সরকারি অফিসে নামমাত্র হাজিরা ছিল। এমনকী, এলাকার স্কুল-কলেজগুলিও ছিল শুনশান। অটো, রিকশা বা টোটোরও দেখা মেলেনি শহরের কোথাও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৫ ১৭:৪৬
Share:

মালদা হয়ে সিপিএমের মিছিলে শ্যামল চক্রবর্তী। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়।

কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ ও কয়েক জন কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মালদহে বন্‌ধ ডেকেছিল সিপিএম। বুধবার সেই বন্‌ধের প্রভাবে এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়ে পড়ে। এ দিন সকাল থেকেই মালদহ এবং ইংরেজবাজার শহরের প্রায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ ছিল। পথে নামেনি কোনও বেসরকারি যানবাহন। হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি বাস চলতে দেখা গিয়েছে। সরকারি অফিসে নামমাত্র হাজিরা ছিল। এমনকী, এলাকার স্কুল-কলেজগুলিও ছিল শুনশান। অটো, রিকশা বা টোটোরও দেখা মেলেনি শহরের কোথাও।

Advertisement

বন্‌ধের সমর্থনে এ দিন ইংরেজবাজার শহর জুড়ে এক বিশাল মিছিল বেরোয়। তার নেতৃত্বে ছিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতা শ্যামল চক্রবর্তী। মিছিল শেষে শহরের রথবাড়ি মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সেখানেও বাম কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বন্‌ধের বিরোধিতা করে পথে নামে তৃণমূলও। প্রতিটি ওয়ার্ডে পাল্টা মিছিল করে তারা।

এ দিনের বন্‌ধ সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন শ্যামলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল খ্যাপা কুকুর হয়ে উঠেছে। ফলে তারা ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশকে ব্যবহার করে, সন্ত্রাস করে নির্বাচন করাতে চাইছে। মানুষ এ সবের প্রতিবাদেই বন্‌ধের ডাকে সাড়া দিয়েছেন।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, ‘‘যে কোনও দল বন্‌ধ ডাকলেই ব্যবসায়ীরা ভয়ে দোকান খোলা রাখেন। তবে দোকানপাট বাদ দিয়ে বাকি সবটাই স্বাভাবিক ছিল। মানুষ এই বন্‌ধকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’’

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার সকালে। ওই দিন তৃণমূলের এক মহিলা প্রার্থীকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। তাঁর নাম রুম্পা রায়। ঘটনার পরে স্থানীয় সিপিএম নেতা রামপ্রসাদ ঘোষ, মনোরঞ্জন সিকদার-সহ ৫০ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সিপিএম বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাদের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময় পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। লাঠির আঘাতে এক সিপিএম প্রার্থী-সহ তিন জন জখম হন।

এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তারক সাহা ও রুপাতুন দাস নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে রুম্পাদেবীকে মারধর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। দুই কর্মীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে ইংরেজবাজার থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় বামফ্রন্ট। পুলিশ তাঁদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও ওই নেতা-কর্মীরা না সরায় ফের লাঠি চালানোর অভিযোগ ওঠে। লাঠির আঘাতে আহত হন তিন বাম নেতা। তাঁদের দু’জনকে আবার আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এঁদের মধ্যে এক জন মহিলা প্রার্থীও ছিলেন। তিনি এখনও মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছেন। বাকিদের এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়। সকলের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৫০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement